খুলনায় ভুল নকশায় উচ্ছেদ নিয়ে ক্ষোভ, সড়কে নকশা পরিবর্তনের দাবি

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি বাজারে সড়ক সরলিকরণকে ঘিরে উচ্ছেদ অভিযান ও নকশা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। ভুল নকশায় উচ্ছেদ চালিয়ে পুরো এলাকাকে আরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষও।রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কপিলমুনি বাজারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় গণশুনানি। এতে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপংকর দাশ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক।গণশুনানিতে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভবন রক্ষার জন্য ভুল নকশায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। বর্তমান নকশা অনুযায়ী সড়কের বাঁক সরল করলে নতুন করে আরও দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকের সৃষ্টি হবে, যা সরকারি হাসপাতাল ও কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ডিগ্রি মাদ্রাসার সামনে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়াবে।স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, এই নকশা বাস্তবায়ন হলে সড়ক নিরাপদ তো হবেই না, বরং দুর্ঘটনা আরও বাড়বে। একটা ভবন বাঁচাতে পুরো বাজার ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। বাজারের ব্যবসায়ী পারভেজ মোহাম্মদ বলেন, আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নই। কিন্তু উন্নয়নের নামে ভুল সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে সেটা মেনে নেয়া যায় না।মাদ্রাসার অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের ভবন ভেঙে দেওয়া হয়েছে, অথচ ঝুঁকি কমেনি। এই নকশা পরিবর্তন না হলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।আরও পড়ুন: মেলায় গিলে খাচ্ছে খেলার মাঠ, হুমকির মুখে খুলনার ক্রীড়াঙ্গনগণশুনানির আগেই কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ডিগ্রি মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদ জানায়। এতে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।গণশুনানি শেষে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক বলেন, স্থানীয়দের আপত্তি ও দাবিগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছি। গণদাবির প্রেক্ষিতে সড়ক সরলীকরণ কার্যক্রম পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।উল্লেখ্য, মাইকিং করে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে গত ৬ ডিসেম্বর কপিলমুনি বাজারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এ সময় বুলডোজার দিয়ে কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ডিগ্রি মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলা ভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরদিন ৭ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা ভাঙন শুরু হলে স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখে অভিযান স্থগিত করা হয়। এরপর ১০ ডিসেম্বর ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের ব্যানারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন কপিলমুনি বাজারে এই গণশুনানির আয়োজন করে।