এজলাসে দাঁড়িয়ে বিচারককে যা বললেন সাংবাদিক আনিস আলমগীর

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ রায় দেন।আদালতের এজলাস রুমে বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে আনিস আলমগীর এক নাটকীয় ও বিস্ফোরক বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি ক্ষমতাকে প্রশ্ন করার অধিকার এবং নিজের গ্রেফতারের পেছনে বহিরাগত ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেন।রিমান্ড শুনানির সময় বিচারকের উদ্দেশে নিজের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। আমি যুদ্ধ কাভার করেছি। সেখানে তালেবানরা আমাকে অ্যারেস্ট করেছিল। তখন মৃত্যুভয় আমার চলে গেছে। আমি আর মৃত্যুকে ভয় পাই না।’তিনি বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক। আমি ক্ষমতাকে প্রশ্ন করি। বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে প্রশ্ন করেছি, শেখ হাসিনার আমলে করেছি। ড. ইউনূসের আমলে করব। ভবিষ্যতেও যারা ক্ষমতায় আসবে তখনও করব। যারা আমাকে নতজানু করতে চায়, সরকারের গোলাম বানাতে চায়, সমস্যা তাদের।’তিনি আরও বলেন, ‘যখন ৩২ নম্বর গুঁড়িয়ে দেয়া হয়, প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু হয় তখন বলেছি, এই প্রতিহিংসা চলতেই থাকবে।’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমি জুলাই মাসে হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছিলাম।’ আরও পড়ুন: তিনজনের রিমান্ড মঞ্জুর /হাদিকে গুলি: আদালতে যে তথ্য দিলেন ফয়সালের স্ত্রীমামলার অন্য আসামিদের প্রসঙ্গে আনিস আলমগীর বলেন, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ছাড়া বাকিদের সঙ্গে তার কখনোই দেখা হয়নি। শাওনের সঙ্গেও বেশ কিছু বছর আগে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার দেখা হয়েছিল।একপর্যায়ে আনিস আলমগীর বলেন, ‘ড. ইউনূস যদি সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে চান তিনি বানাতে পারেন।’ এ সময় বিচারক তাকে থামিয়ে দেন।পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে পুনরায় বক্তব্য শুরু করে আনিস আলমগীর তার গ্রেফতারের পেছনের ষড়যন্ত্রের কথা বলেন। তিনি দেশের বাইরে অবস্থানরত দুই ইউটিউবারের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দিনের পর দিন বক্তৃতা রাখছেন।একমাত্র আমিই বলেছি, এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন পণ্ড হয়ে যাবে। আমি কখনও বলিনি, নির্বাচন চাই না। আমি সবসময়ই বলেছি, নির্বাচন দরকার।তিনি অভিযোগ করেন, এই দুজন ইউটিউবার ফেসবুকে তাকে শায়েস্তা করার জন্য লিখেছেন। এরপর তারা একটি রাজনৈতিক দলকে প্রভাবিত করেন এবং সেই দল ড. ইউনূসকে প্রভাবিত করে তাকে গ্রেফতার করিয়েছে।এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। পরে ডিবি হেফাজতে থাকা সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।