নির্বাচনী প্রচারণা হট্টগোল নিয়ে ভোলার চরফ্যাশনে বিএনপি ও জামায়াতের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জিন্নাগড় ইউনিয়নের চকবাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একে অপরকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন।জামায়েতে ইসলামীর জিন্নাগড় ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামশেদ জামাল জানান, সোমবার সকালে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে চক বাজারে নিজের মালিকানাধীন ওষুধের দোকানে বসেন তিনি। এ সময় মো. বাবুলের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী দোকানে ঢুকে তার ওপর হামলা চালায়। জামায়াতে ইসলামী করার কারণে তার ওপর এ হামলার করা হয়েছে এমন দাবি জামালের।তিনি আরও জানান, হামলায় তিনি ও তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসা জামায়াতের লোকজনের ওপরও হামলা করা হয়। এতে তিনি বুকে ও পিঠে আঘাত পান। আহত হন আরও ৬ জন। এদিকে আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়ার সময় দুই দফা হামলার মুখে পড়েন। অ্যাম্বুলেন্স তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।এ দিকে জিন্নাগড় ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুলের দাবি, তারা পাঁচজন জিন্নাগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় জামায়াত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু লোকজন নিয়ে তাদের গণসংযোগে ঢুকে পড়লে হট্টগোল বাধে। এ নিয়ে জামায়াত কর্মীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।আরও পড়ুন: পাবনায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষে গুলি ছোড়া যুবকের পরিচয় মিলেছেতিনি জানান, প্রচারণা শেষে বাবুল ওষুধ কেনার জন্য জামায়াত নেতা সামশেদের দোকানে যান। ওষুধের মেয়াদ না থাকার বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তৎক্ষণিক স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধান করে দেন। কিছুক্ষণ পরে জামায়েতের ৬০/৭০ জন নেতাকর্মী মোটরসাইকেলে বাজারে সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তাদের ছয়জন আহত হন।চরফ্যাসন হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে ভোলা-৪ (চরফ্যাশন ও মনপুরা) আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা কামাল হামলার নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তার দাবি, এরসঙ্গে জড়িত বিএনপির কর্মীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা নির্বাচনীয় প্রচার, প্রচারণায় বাধা,বিঘ্ন ঘটাতে চায় প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।আরও পড়ুন: ঈশ্বরদীতে জামায়াত-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলাচরফ্যাসন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম রাসেল জানান, চকবাজার এলাকায় জামায়াত-বিএনপি উভয়দলের গণসংযোগ চলাকালে জামায়াতের গণসংযোগে অংশ নেয়া যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ জামায়াতের কিছুলোক বিএনপির গণসংযোগের মধ্যে ঢুকে পড়ে এতে তাদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে ছাত্রশিবির ৩০টি মোটরসাইকেলে গিয়ে সেখানে বিএনপির কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপির ছয় কর্মী আহত হয়েছেন।ইসলামী আন্দোলনের ভোলা দক্ষিণের সেক্রেটারি মাওলানা আব্বাস উদ্দীন বলেন, ‘জামায়াত কর্মীদের ওপর হামলার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে প্রশাসনের সামনে দুই দফা হামলার ঘটনায় ন্যাক্কারজনক। আমি এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।চরফ্যাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর বাদশা জানান, ঘটনার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।