ইংল্যান্ডে আলো ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহান

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ টুয়ের নভেম্বর মাসের 'প্লেয়ার অব দ্য মান্থ' নির্বাচিত হয়েছেন ফারহান আলি ওয়াহিদ। ফুলহ্যাম অনূর্ধ্ব-২১ দলের এই ফরোয়ার্ড নভেম্বর মাসে দুই ম্যাচে ৩ গোলে অবদান রাখায় তাকে মাসের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে।প্রিমিয়ার লিগ টুয়ে ইংলিশ ফুটবলের ক্লাবগুলোর অনূর্ধ্ব-২১ বয়সী দল খেলে থাকে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহানের জন্য নভেম্বর মাসের শুরুটা ছিল দারুণ। রিডিংয়ের বিপক্ষে ৫–১ গোলের বড় জয়ে তিনি ফুলহ্যামের হয়ে একটি গোল করার পাশাপাশি একটি অ্যাসিস্টও করেন।বেয়ারউড পার্কে অলি গফোর্ডের সমতাসূচক গোলের উৎস ছিল ফারহানের নিখুঁতভাবে দেওয়া এক চমৎকার ক্রস। আর নিজের গোলটি করেন দুর্দান্ত আক্রমণাত্মক দক্ষতার প্রদর্শনীতে। বাঁ পায়ের শক্তিশালী শটে বল জড়ান জালের উপরের কোণে।এরপর টটেনহ্যামের বিপক্ষে ১–১ গোলের ড্রয়েও সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় উপস্থিত থেকে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। টম অলিয়টের শট পোস্টে লেগে ফিরে এলে, সেই রিবাউন্ড থেকেই ফারহান বল জালে পাঠান।অনূর্ধ্ব–২১ দলে ও পেশাদার ফুটবলে ক্যারিয়ার শুরু করার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফরোয়ার্ড প্রিমিয়ার লিগ টুয়ে বড় প্রভাব ফেলেছেন। ছয়টি ম্যাচে শুরুর একাদশে থেকে তিনি করেছেন তিনটি গোল ও চারটি অ্যাসিস্ট। আরও পড়ুন: অর্ধ শতাব্দীর গৌরব নিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস লিগে নারায়ণগঞ্জের শুকতারা যুব সংসদপুরস্কার জেতার প্রতিক্রিয়ায় ফারহান বলেন, 'এটা অসাধারণ অনুভূতি। সেপ্টেম্বরেও আমি মনোনীত হয়েছিলাম, কিন্তু তখন জিততে পারিনি। তাই অবশেষে এটি জিততে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমি এটা আশা করিনি, কারণ দারুণ কিছু মনোনয়ন ছিল, যার মধ্যে আমার দুই সতীর্থ অলি গফোর্ড ও জন এসেঙ্গাও ছিল। এটা সত্যিই আনন্দদায়ক এক চমক।'তিনি আরও বলেন, 'আমি প্রতিদিন ধরে ধরে এগোচ্ছি। এটা আমার অনূর্ধ্ব–২১ দলে প্রথম মৌসুম, আর আমি শুধু চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব দলকে অবদান রাখতে—এ ধরনের পুরস্কার আসলে বাড়তি প্রাপ্তি। এই ট্রফিটা আমি কয়েক বছর আগে গটিঙ্গেন-এ জেতা আমার প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট ট্রফির পাশেই রাখব!'২০১৯-২০ মৌসুমে চেলসির একাডেমি থেকে ফুলহ্যামের অনূর্ধ্ব-১৮ দলে যোগ দেন ফারহান। ফুলহ্যাম অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে ৩৬ ম্যাচে ১০ গোল ও ৬ অ্যাসিস্ট করার পর প্রথম পেশাদার চুক্তি পান এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিভাবান ফরোয়ার্ড। বেশ কিছুদিন থেকেই বাংলাদেশি সমর্থকরা ফারহানের খেলার দিকে নজর রাখছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নজরেও আছেন তিনি। তবে আপাতত ফারহানের বাংলাদেশের জার্সি গায়ে চড়ানোর সম্ভাবনা নেই। আরও পড়ুন: সকালে দিল্লি পৌঁছার কথা ছিল মেসির, কুয়াশা ও ‘বিপজ্জনক’ বায়ুমানের কারণে গেলেন বিকেলেফারহানের সঙ্গে বাফুফের কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি–না এমন প্রশ্নের উত্তরে দিনকয়েক আগে বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, 'বাফুফের অফিসিয়ালি (যোগাযোগ) হয়েছে কিনা আমি জানি না। বাট আমি জানি, আমাদের একজন সম্মানীত ইসি মেম্বার ওনাদের পারিবারিক বন্ধু। তাদের (ফারহানের পরিবার) সঙ্গে কথা বলেছিল অনেক আগে, আমরা যখন হামজাকে আনি তখনই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে আমাদের যে ফিডব্যাকটা দেয়া হয়েছিল, ওনার (ফারহান) পরিবার এই মুহূর্তে বাংলাদেশকে (জাতীয় দল হিসেবে) কনসিডার করছে না। তবে, সে এখনও অনেক তরুণ, অনেক প্রতিভাবান। আমার মনে হয়, কিছুদিন পর হয়ত তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আমি যতটুকু মনে করি, প্রথমে তারা ডেফিনিটলি ইউকে'র জন্য ট্রাই করবে। এটা তাদের কলের ওপরই নির্ভর করছে।'তিনি যোগ করেন, 'আমরা অনেক আগেই যোগাযোগ করেছি, তবে আমাদের যেটা বলেছে,  তারা এই মুহূর্তে কোনো ন্যাশনাল টিমের কথা ভাবছে না, এই মুহূর্তে তার ফোকাস শুধুই লিগের দিকে।'