৫৪ বছরে দেশের অর্থনীতির বিজয় হলো কতটা?

বারবার হোঁচট খেয়েও উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতির মাত্র এক বছর দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। তারপরও বারবার সামনে এসেছে কতটা হয়েছে অর্থনীতির বিজয়? যেখানে আয় বৈষম্যের গোলকধাঁধায় দেশের মোট সম্পদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বন্দি হয়েছে শীর্ষ এক শতাংশ ধনীর হাতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেকারত্ব দূর করে আয় বৈষম্য ঘোচাতে না পারলে ধরা দেবে না অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত বিজয়।একাত্তরে বাঙালি জাতি হাজারও স্বপ্ন নিয়ে জয় করে একটি ভুখণ্ড। গুটি গুটি পায়ে পার হয়েছে ৫৪ বছর, তবে স্বপ্ন পূরণ হলো কতটা? কতটা হলো দেশের অর্থনীতির বিজয়? হিসাব কষতে থাকি ইটপাথরের নগরী থেকে। এখানে অট্টালিকার ভিড়ে রোজ মিলিয়ে যায় ছোট ছোট স্বপ্ন। রোজ চলে খোলা আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর যুদ্ধ। তবে মাথার ওপরের ছাদটাই যে নড়বড়ে। বড় বড় প্রকল্পে স্বস্তি মিলেছে নগরবাসীর, মেট্রোরেল মতিঝিল থেকে উত্তরায় নিয়ে যায় মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ মিনিটে। একই শহরে তিন বেলা খাদ্যের নিশ্চয়তা পেতে দেড়-দুঘণ্টা অনায়াসেই কেটে যায় টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে। আরও পড়ুন: সৌদি থেকে আসবে ৮০ হাজার টন সার, বাফার গুদাম হবে নওগাঁ-বগুড়ায় নভেম্বরে প্রকাশিত হওয়া বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, যেকোনো সময় দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২০ লাখ কর্মসংস্থান কমেছে, ২০২৫ সালে আরও ৮ লাখ কর্মসংস্থান কমার আশংকা রয়েছে। ডিসেম্বরে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট ২০২৬’ এর তথ্য, দেশের মোট সম্পদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ রয়েছে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ মানুষের হাতে। স্বাধীনতার পর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল যেই কৃষিতে ভর করে, ফিরতে চাই সেই তেপান্তরের মাঠে। ঋণের জালে আটকা কৃষকদের অভিযোগ, পাচ্ছেন না শ্রমের যথাযথ মূল্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জনে ঘোচাতে হবে আয় বৈষম্য, লাগাম টানতে হবে বেকারত্বের। আরও পড়ুন: ২১৫ কোটি টাকায় ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের যা অর্জন হয়েছে, এতে আমাদের গর্বিত হওয়ার অনেক কিছু আছে। কিন্তু একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’     সামাজিক খাতে অবশ্য ব্যয় বাড়িয়েছে সরকার, সেখানেও শুভংকরের ফাঁকি। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য, সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মাত্র অর্ধেক সামাজিক সহায়তা পায়।