আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।বর্তমানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে (এসজিএইচ) চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জন ও হাদির চিকিৎসায় যুক্ত ডা. আব্দুল আহাদ।সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ডা. আহাদ জানান, হাদির অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে এবং তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। দেশটির নিউরোসার্জনদের সবশেষ মূল্যায়ন অনুযায়ী হাদির ব্রেনের ইস্কেমিক পরিবর্তন ও ইডেমা (ফোলা) কমেনি। চিকিৎসকদের মতে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ‘টাইম উইন্ডো’ বা সময়সীমাকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হচ্ছে।ডা. আব্দুল আহাদ আরও জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ঢাকায় অস্ত্রোপচার ও নিবিড় চিকিৎসা শেষে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। এসজিএইচ-এর ইমার্জেন্সি কমপ্লেক্সে ভর্তির পর থেকেই নিউরোসার্জারি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিম যৌথভাবে তার চিকিৎসা শুরু করে। আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরে হাদির পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিষয়ে যা জানা গেলসিঙ্গাপুরে নেয়ার পর করা ব্রেনের সিটি স্ক্যানে হাদির বাম পাশের ইস্কেমিক পরিবর্তন অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ব্রেনে ফোলা বা ইডেমা এখনও বিদ্যমান। ব্রেন স্টেমে আঘাতের কারণে মস্তিষ্কের ভেন্ট্রিকুলার সিস্টেমেও চাপ তৈরি হয়েছে, যা চিকিৎসকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ডা. আহাদ জানান, বর্তমানে হাদির কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুস কৃত্রিম ভেন্টিলেশনের সহায়তায় সচল রাখা হয়েছে। তার জিসিএস (গ্লাসগো কোমা স্কেল) স্কোরে এখনও কোনো পরিবর্তন আসেনি। অর্থাৎ, নিউরোলজিক্যাল রেসপন্সে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি বা অবনতি–কোনোটিই লক্ষ করা যাচ্ছে না।চিকিৎসকদের মতে, এই পর্যায়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সময়। ব্রেন ইনজুরির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ‘টাইম উইন্ডো’ থাকে, যার মধ্যে শরীর ইতিবাচক সাড়া দিলে পরবর্তী অবস্থার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেই সময়সীমার মধ্যেই হাদির শরীর কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় কি না, সেদিকেই এখন চিকিৎসকদের নিবিড় নজর।ডা. আহাদ আরও জানান, হাদির ফুসফুসের সবশেষ সিটি স্ক্যানে আগের মতোই রক্তের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ কারণেই বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় তার বুকে চেস্ট ড্রেন দেয়া হয়েছিল। সিঙ্গাপুরেও সেই জটিলতা মাথায় রেখেই শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থাপনা চলমান রয়েছে।এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা দাবিকে নাকচ করেছেন চিকিৎসকরা। ডা. আহাদ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, হাদি চোখ খুলেছেন বা অবস্থার উন্নতি হয়েছে–এ ধরনের কোনো তথ্য সত্য নয়। তার অবস্থা এখনও স্ট্যাটিক, অর্থাৎ আগের জায়গাতেই রয়েছে। জ্ঞান ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা এখনই কোনো নিশ্চিত পূর্বাভাস দিতে পারছেন না।