বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের

বিজয়ের ৫৫ বছরে বাংলাদেশ। লাখো আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জানান দেয় এক অখণ্ড সার্বেভৌম দেশ হিসেবে। ভোর থেকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে বীরত্ব গাঁথা জাতীয় স্মৃতিসৌধে। এত বড় অর্জনের আয়োজনেও মানুষের হতাশা, বিজয় অর্জন হলেও আজও প্রকৃত মুক্তি ও শান্তির স্বাদ মেলেনি। বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তাদের।১৬ ডিসেম্বর শুধু একটি তারিখ নয়, একটি জাতির আত্মপরিচয়ের ঘোষণা। ধর্ম বর্ণ দলমত বিভেদ ভুলে এক কাতারের এই মিছিল জানান দেয় আত্মমর্যাদায় উঁচু ঐক্যের। এই মাটি এই ভূখণ্ডকে নিজের করে পাওয়ার আনন্দে বিজয়ের কলতান শোনা যায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে। এই স্মৃতিস্তম্ভ নিজেদের অস্তিত্ব।মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা কয়েকজন বলেন, স্বাধীনতার প্রকৃত সুখ এখনও পাইনি। আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে কিভাবে শান্তিতে বসবাস করতে পারবো এখন চিন্তা এটাই। দেশে এমন একটা সরকার আসুক যাতে আমাদের দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবে।এক যুবক বলেন, আজ বিজয় দিবস, সবাই মিলে বিজয় উদযাপন করবো। কিন্তু এসে দেখলাম আমরা বিজয়টাকে দলীয়ভাবে বিভক্ত করে নিয়েছি।এক বৃদ্ধ বলেন, স্বাধীনতার বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারেনি।আরও পড়ুন: দৃষ্টিনন্দন ‘এয়ার শো’, দর্শনার্থীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসবিজয়-আকাঙ্ক্ষা-মুক্তি। ১৯৭১ এ সার্বভৌম বাংলাদেশ থেকে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তির পথ তৈরি হয়েছিল। আজও মেলেনি সেই মুক্তির পথ। তাইতো হতাশার সুর মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের মুখে।এক ব্যক্তি বলেন, নতুন করে একটি দেশের চিন্তা আমরা করেছিলাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় না, আমাদের এই দেশ সত্যিকার অর্থে দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে।এক নারী বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক সরকার দেয়নি, যার কারণে দেশের পরিস্থিতি খুবই খারাপ।২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে বিজয়ের এই দিনে নতুন করে স্বপ্ন দেখে বাঙালি। স্বপ্ন দেখে এমন এক বাংলাদেশের-যেখানে থাকবে ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও সমতার শাসন। যেখানে শিশুর হাসি হবে নিরাপদ, তরুণের স্বপ্ন হবে দৃঢ়, আর প্রবীণের জীবন হবে সম্মানের।বাবার হাত ধরে স্মৃতিসৌধে আসা দুই শিশু বলে, আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি।মহান বিজয় দিবস আমাদের কেবল অতীতের গল্প শোনায় না-বিবেককে নাড়া দেয়, চেতনাকে জাগ্রত করে। এই বিজয় শিখিয়েছে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে, শিখিয়েছে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে। লাল-সবুজের পতাকা আমাদের মনে করিয়ে দেয়-এই দেশ ভালোবাসার, এই দেশ রক্ষা করার।