একাত্তরে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তবে তা অর্থবহ হয়নি: চরমোনাই পীর

একাত্তরে আমরা প্রতীকী স্বাধীনতা পেয়েছি বটে, কিন্তু সেই স্বাধীনতা অর্থবহ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, সত্যিকারের স্বাধীনতা হলো সমাজে পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি হওয়া, পারস্পরিক আস্থা, সহনশীলতা ও সহমর্মিতাপূর্ণ সমাজ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হওয়া। বাংলাদেশে সেটাও হয়নি। তাহলে একাত্তর সালে এত রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করে আমরা আসলে কী পেলাম? মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিজয়ের ৫৪ বছর: আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণে করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুসারে একাত্তর সালে মানুষ যুদ্ধ করেছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। আর একাত্তরের আগের ঘটনা প্রবাহ বিবেচনায় নিলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের এই কারণ বিবেচনা করলে দেখা যায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আদতে ব্যর্থ হয়েছে। হ্যাঁ, আমরা আলাদা ভূখণ্ড পেয়েছি, নিজস্ব পতাকা পেয়েছি- কিন্তু এগুলো স্বাধীনতা না; বরং এগুলো হলো স্বাধীনতার প্রতীক। প্রকৃত স্বাধীনতা হলো সমাজ থেকে আয় বৈষম্য দূর হওয়া, সুযোগের বৈষম্য দূর হওয়া, সম্মান ও মর্যাদার বৈষম্য দূর হওয়া। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয়নি। আরও পড়ুন৬৫’র পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই একাত্তরে ভারত আমাদের সহযোগিতা করে স্বাধীনতার বিরোধীরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে: ফখরুল  তিনি বলেন, আসল স্বাধীনতা হলো মানুষের ওপরে অত্যাচার-নিপিড়ন বন্ধ হওয়া, খুন-গুম বন্ধ হওয়া, বিনাবিচারে আটক করা বা হত্যা বন্ধ হওয়া, সুবিচারের নিশ্চয়তা পাওয়া, খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া। অর্থাৎ মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হওয়া। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে সেটাও হয়নি। চরমোনাই পীর আরও বলেন, ২৪-এর জুলাই আগস্ট আমাদের জন্য আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছে। ৫৪ বছরের জমা হওয়া জঞ্জাল দূর করে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার আরেকটি সুযোগ এসেছে। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। সেই সম্ভাবনা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারি মাসউদ। কে এম শরীতুল্লাহ ও মুফতি ফরিদুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- দলের যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, আলহাজ মো. আনোয়ার হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, আবদুল আউয়াল মজুমদার, ইঞ্জিনিয়ার মো. মুরাদ হোসেন প্রমুখ। আরএএস/কেএসআর