বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকা লিওনেল মেসির ভারত সফর নিয়ে আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না ভক্ত-সমর্থকদের। তাকে একটা নজর দেখতে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভিড় জমিয়েছিলেন হাজার হাজার দর্শক। তবে মেসিকে ভালো করে দেখতে না পেয়ে বিশৃঙ্খলা করেন দর্শকরা, ভাঙচুর করেন স্টেডিয়ামে। সেদিনের সেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজ্য সরকার অরূপের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন এবং ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই নিয়েছেন। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি যুবকল্যাণ, আবাসন ও বিদ্যুৎ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতেন অরূপ বিশ্বাস। তবে তিনি শুধু ক্রীড়ামন্ত্রীর পদেই ইস্তফা দিয়েছে। অন্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাবেন তিনি। ইস্তফা গ্রহণ করে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্রীড়া দফতর অন্য কারও হাতে দেওয়া হবে না। যত ক্ষণ না ‘নিরপেক্ষ’ তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ তিনি নিজের হাতেই রাখবেন সেই দফতর। ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী হবেন মমতা। আরও পড়ুন: কেন মোদির সঙ্গে দেখা করেননি মেসি? মেসিকে ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া সেই ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মেসিকে নিয়ে এমন বিশৃঙ্খল ঘটনার পর রাজ্যব্যাপী ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পদত্যাগের দাবি ওঠে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অরুপ বিশ্বাস গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তার সেই ইস্তফার আবেদনে সাড়া দিয়ে আজ তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এর আগে গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন বা সল্টলেক স্টেডিয়ামে ঢোকে মেসির গাড়ি। এরপর তাকে একনজর দেখতে ভিড় জমায় দর্শকরা। আর তাতেই সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। এ সময় ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডে আলো ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহান একপর্যায়ে স্টেডিয়ামের প্রাচীর ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন দর্শকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামানো হয় র্যাফ। তবে তাতেও খুব একটা কাজ হয়নি। ক্ষুব্ধ হয়ে অনেকেই ছিঁড়ে ফেলেন গোলপোস্টের জাল, ড্রেসিংরুমে যাওয়ার টানেলের ছাউনিও ভেঙে ফেলেন। সেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্টেডিয়ামের বাইরেও। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। যদিও এ সময় মেসিকে ঘিরে রাখেন মন্ত্রী, নেতা ও কর্মকর্তারা। এমন ঘটনায় অনুষ্ঠানের আয়োজক শতদ্রু দত্তকে ওই দিনই গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।