ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় নিরীক্ষণ এসআইআর-এর প্রথম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ৫৯ লাখ নাম। একই সঙ্গে অন্তত ৩০ লাখ ভোটারের পূর্বসূরির সঙ্গে বর্তমান অবস্থার মিল না থাকায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে তলব করা হবে বলেও জানা গেছে।পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে একযোগে চলছে ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) বা নিবিড় নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফার খসড়া তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) করা হয়। নির্ধারিত তারিখেই সকাল থেকে প্রকাশ পায় বহুচর্চিত খসড়া ভোটার তালিকা। এতে রাজ্যে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮ লাখ ১৬ হাজার ৬৩১ জন। তবে এই তালিকা থেকে ১ কোটি ৬৬ লাখ ভোটারকে সন্দেহের চোখে দেখছে নির্বাচন কমিশন। খসড়া তালিকায় ২০২৪ সালের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৮৯৮ জন। কমিশনের দাবি, বাদ যাওয়া নামগুলোর মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ মৃত ভোটার, ১২ লাখ ১ হাজার ভোটার তালিকায় ফর্ম পূরণ করেননি অথবা তাদের পাওয়া যায়নি কিংবা নিখোঁজ। প্রায় ২০ লাখ ভোটার ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন এবং প্রায় ২ লাখ ভুয়া ভোটার রয়েছেন। আরও পড়ুন: সিডনির সমুদ্র সৈকতে হামলায় জড়িতদের একজন ভারতের নাগরিক! এখন বড় প্রশ্ন, প্রায় ৫৯ লাখ নাম বাদ যাওয়ার পরও কেন নির্বাচন কমিশন আরও ১ কোটি ৬৬ লাখ ভোটারকে সন্দেহভাজন হিসেবে দেখছে। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কমিশন জানিয়েছে, এই সংখ্যক ভোটার ২০০২ সালের সর্বশেষ এসআইআর তালিকার সঙ্গে নিজেদের বাবা-মা, পূর্ব পুরুষদের নামের লিঙ্ক করতে পারেননি। এছাড়াও ফর্ম পূরণে ভুল, কিংবা অন্য কোনো ধরনের অসংগতি রয়েছে বলে দাবি কমিশনের। এদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে এদিনও একইভাবে প্রতিবাদে সামিল হতে দেখা যায় কমিশনের নির্দেশে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে যুক্ত বুথ লেভেল অফিসারদের। তাঁদের অভিযোগ, কমিশন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে তালিকায় একাধিক ভুল করেছে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি। আগামী বছরই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই ভোটার তালিকা সংশোধনকে বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে অভিযোগ করলেও বিজেপি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। আরও পড়ুন: মুসলিম নারীর নিকাব টেনে খুললেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধীদের নিন্দা বিহারেও একইভাবে এবার ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন করতে গিয়ে প্রায় ৬২ লাখ নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে। এরপরই রাজ্যটিতে বিধানসভা ভোট হয় এবং বিজেপি অতীতের রেকর্ড ভাঙা ব্যবধানে আসন লাভ করে রাজ্যটিতে নীতিশ কুমারের সঙ্গে জোট সরকার গড়ে ক্ষমতায় বসে।