সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে আত্মনিয়োগই শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য

জ্ঞান কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য নয়, এটি দায়িত্বের সৃষ্টি করে এমন আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) বলেছেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য।’বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।সমাবর্তনের সভাপতি ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি নৈতিক দীক্ষার স্থান। শহীদ শামসুজ্জোহা ও বদর উদ্দিন ওমর তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’তিনি বলেন, জ্ঞান দিয়ে শুধু নিজেকে উন্নত করলেই চলবে না, সমাজের জন্য কাজ করতে হবে। পেশাগত উৎকর্ষতার পাশাপাশি সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।আরও পড়ুন: ২৬০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি নিয়ে বড় সুখবরগ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকা এবং ন্যায্যতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। জুলাই যোদ্ধাদের আদর্শ স্মরণ করে তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ যেন সঠিক পথে হয়, সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।প্রায় ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত এ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ৬০, ৬১ ও ৬২তম ব্যাচের মোট ৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ ও আনন্দঘন আবহ।এর আগে সকাল থেকে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা পদযাত্রার মাধ্যমে সমাবর্তনস্থলে যোগ দেন। গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করায় উচ্ছ্বাস ও গর্বের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে।আরও পড়ুন: মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষকদের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার কঠোর বার্তাঅনুষ্ঠানে গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘ন্যায়ের পক্ষে বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলা এবং নিজেদের অর্জন দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগানোই একজন গ্রাজুয়েটের দায়িত্ব।’বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা মানুষকে কেবল দক্ষ করে তোলে না, বরং দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।’এ দিকে, নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধি, সরকারি ছুটির দিনে সমাবর্তন আয়োজন এবং প্রধান উপদেষ্টাকে অতিথি করার দাবিতে গ্রাজুয়েটদের একাংশ সমাবর্তন বর্জনের ডাক দেন। তবে এসব দাবি ও কর্মসূচির মধ্যেও অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।