একীভূতকরণের শর্ত ভেঙে রবির বিরুদ্ধে আলাদাভাবে এয়ারটেল পরিচালনার অভিযোগ তুলেছে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) দেয়া চিঠিতে তারা জানিয়েছে, এয়ারটেলের আলাদা সেবা দেয়া কিংবা প্রচারণা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে গ্রামীণফোন। তবে রবি বলছে, আইন মেনেই সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে এয়ারটেল গ্রাহক সেবা দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিটিআরসিও আইনি কোনো ব্যত্যয় খুঁজে পায়নি।২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর রবি ও এয়ারটেলকে একীভূতকরণের অনুমোদন দেয় টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ওই প্রজ্ঞাপনের ২০ নম্বর শর্তে বলা হয়, এয়ারটেলের সব পণ্য ও সেবার বিপণন এবং বিজ্ঞাপন ‘রবি আজিয়াটা লিমিটেড’-এর নামে করতে হবে। তবে নয় বছর পেরিয়ে গেলেও রবি এখনো এয়ারটেলের সেবাগুলোকে আলাদা ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচালনা ও প্রচার করছে- এমনটাই অভিযোগ তুলেছে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক। বিটিআরসিকে দেয়া চিঠিতে প্রতিষ্ঠান দুটি বলছে, রবির নাম উল্লেখ ছাড়াই শুধু 'এয়ারটেল' ব্রান্ড নামে একচেটিয়া সিম বিক্রি করা হচ্ছে। আলাদা ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে ডেটা প্যাক, রিচার্জ অফার ও রোমিংসহ বিভিন্ন গ্রাহক সেবা দিচ্ছে। যা একীভূতকরণের শর্ত লঙ্ঘন বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, অনুমতি ছিল দুই বছরের জন্য। সেই সময়সীমা অনেক আগেই পেরিয়ে গেলেও তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা যদি কোনো কারণে বিষয়টি বিলম্বিত না করে, তাহলে আদালতে যাওয়ার মতো যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে। আরও পড়ুন: ১১ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের হার্ডকপি ধ্বংস করতে চায় গ্রামীণফোন-বাংলালিংক বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, রবি ও এয়ারটেল কার্যত একই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। তবে তাদের প্রাইসিং ও প্রোডাক্ট সম্পূর্ণ আলাদা। এ বিষয়ে কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে-এটি সঠিক কি না। অভিযোগের জবাবে রবি জানায়, সাব-ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো শর্ত লঙ্ঘন হয়নি। স্কিটোর মাধ্যমে গ্রামীণফোনসহ বিশ্বের অনেক অপারেটর একই ধরনের রীতি অনুসরণ করছে। রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, মার্জারের শর্তে যেসব বিষয় উল্লেখ আছে, সেগুলো মেনে চলা হচ্ছে। অন্য অপারেটররা বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য যাচাই-বাছাই করে রবির বিরুদ্ধে শর্ত লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ পায়নি বিটিআরসি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, এর আগেও দুই-তিনবার এমন বিষয় এসেছে এবং প্রতিবারই আইনগতভাবে যাচাই করে দেখা গেছে-এখানে আইন ভঙ্গ করে কিছু করা হয়নি। বর্তমানে পাঁচ কোটি গ্রাহককে মোবাইলে ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে রবি।