রাতের আঁধারে কৃষকের ১১৭ আমগাছ কেটে ফেললো দুর্বৃত্তরা

রাজশাহীর পবার নওহাটা পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় রাতের আঁধারে পরিকল্পিতভাবে ১১৭টি উন্নত জাতের আমগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুই বছরের শ্রম, স্বপ্ন ও বিনিয়োগ এক রাতেই হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক সাইদুর রহমান।মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে সিন্দুর কুসুম্বী কাজীপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি আমবাগানে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, দুই বছর আগে ১৫ শতক জমিতে তিনি ১৩৩টি উন্নত জাতের আমগাছ রোপণ করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল বারোমাসি, কাটিমন, আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গৌড়মতি ও বারি-৪ জাতের আমগাছ। শুরু থেকেই নিয়মিত সেচ, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই দমনে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে অনেক গাছে মুকুল এসেছিল। বুধবার সকালে বাগানে গিয়ে তিনি দেখতে পান, সারি সারি আমগাছ গোড়া থেকে কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ডালপালা ও পাতার স্তূপ। তার দাবি, দুর্বৃত্তরা ঈর্ষা থেকে এ কাজ করেছে। সাইদুর রহমান বলেন, ‘গতকালই আমগাছের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে প্রায় ৬০ কেজি রসুনের বীজ রোপণ করেছি। সব মিলিয়ে বড় পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ভোরে এসে দেখি সব শেষ। ১৩৩টি গাছের মধ্যে ১১৭টি কেটে ফেলা হয়েছে। মনে হচ্ছে কেউ যেন আমার বুকের ভেতর ছুরি চালিয়েছে।’ আরও পড়ুন: ৭১৪ হেক্টর বাগান উজার, রাজশাহীর আম নির্ভর অর্থনীতি কোন পথে? তিনি দাবি করেন, গাছ, পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তার প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ শুধু আর্থিক নয়; দুই বছরের পরিশ্রম, ভবিষ্যৎ আয়ের সম্ভাবনা ও পরিবারের জীবিকার নিশ্চয়তাও একসঙ্গে ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পূর্বশত্রুতা, জমি সংক্রান্ত বিরোধ কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্য থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। কেউ কেউ মনে করছেন, বাগানটি ভালোভাবে বেড়ে ওঠায় ঈর্ষা থেকেই এ নাশকতা চালানো হয়েছে। তবে এখনও প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক সাইদুর রহমান পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে পবা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রতাপ কুমার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে। পূর্বশত্রুতা ও জমি বিরোধসহ সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।