হাদি হত্যাচেষ্টা: ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে বিচারকের খাসকামরায় ফয়সালের মা-বাবা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টা মামলায় মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদের মা-বাবা জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন।১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার জন্য বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তাদের ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদলাতের বিচারকের খাসকামরায় নেয়া হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) এবং মা মোছা. হাসি বেগমকে (৬০) গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০। তাদের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ বিকেলে তাদের আদালতে তোলা হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, তাদের চার সন্তানের মধ্যে আসামি শুটার ফয়সাল তৃতীয়। আসামি শুটার ফয়সাল রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় তার বোন জেসমিন আক্তারের সপ্তম তলার বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করত। ঘটনার দিন রাতে আসামি শুটার ফয়সাল জেসমিন আক্তারের বাসায় একটি ব্যাগ নিয়ে ওঠেন। পরে ওই বাসার চিপা দিয়ে কালো ব্যাগটি ফেলে দেন এবং আবার আসামি তার ভাগনে জামিলকে (১৮) দিয়ে ব্যাগটি নিয়ে আসেন। আসামি তার নিজ ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের একটি ওই বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্যটি তার মা হাসি বেগমকে দেন। পরে সেখানে বাবা-মার সঙ্গে দেখা করে। সেখানে আসামি শুটার ফয়সাল তার অবস্থান নিরাপদজনক মনে না হওয়ায় আগারগাঁও থেকে মিরপুর, পরে শাহজাদপুরে আসামি মো. হুমায়ুন কবিরের ভাতিজা আরিফের বাসায় যান। শুটার ফয়সালের ব্যাগ নিয়ে তার বাবা মো. হুমায়ুন কবির একটি সিএনজি ভাড়া করে দেন এবং সঙ্গে কিছু টাকাও প্রদান করেন। পরবর্তীতে আসামিরা তার ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবলু ওরফে রাজের কেরাণীগঞ্জের বাসায় আসে এবং তারা জুরাইন থেকে দুটি মোবাইল সিম কিনে ব্যবহার করে। আরও পড়ুন: হাদিকে গুলি: গুরুত্বপূর্ণ ক্লু এখন পুলিশের হাতে গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি একটি রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল করে আসা দুই জনের একজন তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালানোর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে শনাক্ত করে। তারা হলেন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান (প্রধান সন্দেহভাজন শুটার) এবং আলমগীর হোসেন (বাইক চালক)। এ ঘটনায় ফয়সাল করিমের স্ত্রী, প্রেমিকা ও শ্যালককে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এদিকে হাদিকে গুলি করার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিকানা নিয়ে আদালতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামানের আদালত কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।