নাশকতার দুই মামলায় মির্জা আব্বাসসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

রাজধানীর পল্টন ও শাহজাহানপুর থানার নাশকতার দুই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা-৮ আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী মির্জা আব্বাস এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানসহ মোট ৪৫ জনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত এ আদেশ দেন। মির্জা আব্বাসের আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক ও মহিউদ্দিন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা জানান, পৃথক দুই থানার মামলায় আজ চার্জগঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও ঢাকা-১২ আসনের বিএনপি প্রার্থী সাইফুল আলম নিরব, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সফু, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা-৯ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সেক্রেটারি হাবিবুর রশিদ হাবিবসহ অনেকে। পল্টন থানার মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের এক হাজার থেকে ১২০০ নেতাকর্মী বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শান্তিনগরের দিকে অগ্রসর হন। বিকেল ৫টার দিকে শান্তিনগর ক্রসিংয়ে পৌঁছালে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও যানবাহন ভাঙচুর শুরু করেন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে তারা আরও উগ্র হয়ে ওঠে এবং পুলিশের কাজে বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হত্যার উদ্দেশ্যে পাঁচটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় তৎকালীন পল্টন থানার উপপরিদর্শক মেহেদী মাকসুদ বাদী হয়ে মামলা করেন। একই বছরের ২৬ মার্চ পল্টন থানার উপপরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ অব্যাহতি পান। অন্যদিকে, শাহজাহানপুর থানার মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মালিবাগ এলাকায় বিএনপির ১৫০ থেকে ২০০ নেতাকর্মী মিছিল করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তারা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পুলিশের কাজে বাধা দেন। পুলিশ নিষেধ করলে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং পুলিশের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন, এতে প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক মো. আশরাফ আলী মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ২০ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক মো. রুহুল আমিন মুন্সি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে এ মামলাতেও উচ্চ আদালত থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ অব্যাহতি পান। এমডিএএ/এমএএইচ/