স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই মাস বেতন বন্ধ, ভোগান্তিতে ডাক্তার-নার্সর

ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে ডাক্তার, নার্সসহ ১৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার (ইউএইচএফপিও) পদটি শূন্য থাকা এবং ডিডিওশিপ (আর্থিক ক্ষমতা) না পাওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. তৈয়বুর রহমান বদরি হন। এখনও ওই পদে নতুন করে কেউ যোগদান করেননি। এতে দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় চরমভাবে বিপাকে পরেছেন ১৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এরমধ্যে প্রথম শ্রেণির ১২ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ৩২ জন ও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ৮৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। লালমোহন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মহসীন খান জানান, তিনি লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হিসেবে রয়েছেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু ডিডিওশিপ না দেওয়ায় গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের নিজেরসহ ডাক্তার, নার্সসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা তুলতে পারছেন না। তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু এখনও কোনো সমাধান হয়নি। ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাকিয়া সুলতানা জানান, দুই মাস ধরে আমি বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। কিন্তু প্রতিদিনই রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বেতন না পাওয়ার কারণে সংসার ঠিকমতো চালাতে পারছি না। আমার ছেলেকে ঢাকায় ভর্তি করাতে পারছি না। এছাড়াও অসুস্থ বাবার উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছি না। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান প্রয়োজন। নার্স মুক্তা বেগম ও নন্দিতা হালদার জানান, দুই মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এরপরও প্রতিদিন রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ভোলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনিরুল ইসলাম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বদলির পর এখন পর্যন্ত কোনো কর্মকর্তা যোগদান করেননি। একজনকে এখানে দিলও তিনি যোগদান করেননি। যার কারণে বেতন তুলতে পারছেন না তারা। নতুন করে কর্মকর্তা পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা বেতন তুলতে পারবেন না। তিনি বলেন, আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে কয়েক বার জানিয়েছি। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত এটির সমাধান করবেন। জুয়েল সাহা বিকাশ/এমএন/এমএস