মাদক কারবারিদের ‘সেইফ জোন’ খ্যাত চরআলগি পরিদর্শনে প্রশাসন

জাগো নিউজে মাদক কারবারিদের ‘সেইফ জোন’ হিসেবে পরিচিত চরআলগি গ্রাম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন চরআলগি গ্রাম পরিদর্শন করেছে প্রশাসন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে চরআলগি পরিদর্শন করে ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মাদকবিরোধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আরিফুর রহমান। এসময় তিনি স্থানীয়দের অভিযোগ শোনেন ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। প্রশাসনিকভাবে চরআলগি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। অন্যপাশে ময়মনসিংহের পাগলা থানা ও গাজীপুরের কাপাসিয়া। চারপাশের নদী গ্রামটিকে আলাদা করেছে, আর সেই বিচ্ছিন্নতাই এখন মাদকচক্র আর অপরাধীদের নিরাপদ ঘাঁটি। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর ‘মাদক কারবারিদের সেইফ জোন: বিচ্ছিন্ন গ্রাম চরআলগি’ শিরোনামে জাগো নিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আরও পড়ুন:মাদক কারবারিদের ‘সেইফ জোন’ বিচ্ছিন্ন গ্রাম চর আলগী মাদকবিরোধী সমাবেশে স্থানীয় শিক্ষক, ইমাম, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা এলাকায় নিয়মিত পুলিশ টহল, নৌযানসহ স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দ্রুত ও ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনার দাবি জানান। স্থানীয়রা জানান, নদীঘেরা ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের উপস্থিতিতে তারা কিছুটা স্বস্তি পেলেও স্থায়ী ব্যবস্থা ছাড়া সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না বলে মনে করছেন। পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আরিফুর রহমান বলেন, প্রয়োজনে পাকুন্দিয়া থানা থেকে নিয়মিতভাবে চরআলগি এলাকায় ক্যাম্প বসানো হবে। তিনি জানান, নিজে উপস্থিত থেকে তার সেকেন্ড অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে এলাকায় আসবেন। প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সঙ্গে নিয়ে এখানে থানা ক্যাম্প ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। ওসি বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কারাগারে পাঠানো হবে। ইভটিজিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের নাম তালিকাভুক্ত করে পুলিশকে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তবে নিরপরাধ কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মাদক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমে মাদক সেবনকারীদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। এরপর সেই তালিকা অনুযায়ী পুলিশ, ইউএনও ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের চিকিৎসার জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, এলাকায় মাদক সেবনকারীর সংখ্যা কমলে মাদক ব্যবসায়ীদের বাজারও ভেঙে পড়বে। ওসি এস এম আরিফুর রহমান আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে কোনো ছাড় নেই। এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে নিয়মিতভাবে এখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এসকে রাসেল/এমএন/এমএস