সরু রাস্তা, যানজট, গ্যাস সংকট, জলাবদ্ধতা, মশার উপদ্রবসহ নাগরিক নানা সমস্যা ভোগাচ্ছে ঢাকা-৭ আসনের বাসিন্দাদের। আসনটিতে এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা বিএনপি ও জামায়াত- দুই দলের প্রার্থীই ভোটে লড়ছেন প্রথমবারের মতো। তাই ভোটারদের মন জয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তবে কেবল কথার ফুলঝুরি নয়, বাস্তবায়ন চান পুরান ঢাকাবাসী।চারশ বছরের ঐতিহ্য, পুরোনো স্থাপত্য, মুঘল আমলের নিদর্শন আর বিখ্যাত সব মসজিদ-মন্দির। এই সব স্থাপনার বেশিরভাগই পড়েছে ঢাকা-৭ আসনের লালবাগ, চকবাজার ও বংশালে। এছাড়াও কোতোয়ালি ও কামরাঙ্গীরচরের একাংশও আসনটির অন্তর্ভুক্ত। বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা এই অঞ্চল ব্যবসা-বাণিজ্যেরও অন্যতম কেন্দ্র।অতীত ঐতিহ্য থাকলেও এখন অজস্র সমস্যা-সংকটে জর্জরিত পুরান ঢাকার এ এলাকাগুলো। ঘিঞ্জি গলি, সরু রাস্তা, যানজট, গ্যাস সংকট নিত্যদিনের সঙ্গী। বছরের বড় একটি সময় ভোগায় জলাবদ্ধতা। আছে মশার উপদ্রবও। পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্র, মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অগ্নিনিরাপত্তা- সবই উপেক্ষিত।এলাকাবাসী বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। বৃষ্টি হলে হাঁটু পর্যন্ত পানি উঠে যায়। এখানে চলাফেরা করা খুব কষ্ট। গ্যাস পাই না ঠিকমতো। রাস্তা ভাঙা। অসুস্থ রোগী সময় মতো হাসপাতালে নিতে পারি না।ঢাকা-৬: নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলছে ইশরাক ও মান্নানের নির্বাচনী উত্তাপআরেক এলাকাবাসী বলেন, যদি আগুন লাগে, ভূমিকম্প হয় তাহলে মানুষ যে বের হবে বা কোনো ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকবে এর কোনো ব্যবস্থা নেই।সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই আগামীর জনপ্রতিনিধির কাছে সংকটে থাকা পুরান ঢাকাবাসীর প্রত্যাশারও কমতি নেই। নাগরিক সংকট নিরসনের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের সুষ্ঠু পরিবেশ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-মাদক নিয়ন্ত্রণে ভাবি এমপির সক্রিয় ভূমিকা চান ঢাকা-৭ আসনের বাসিন্দারা।এলাকাবাসীরা বলেন, এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, মাদক থেকে শুরু করে সব ধরনের অপকর্ম থেকে আমরা যেনো মুক্ত থাকতে পারি। ফুটপাতগুলো যেনো দলখমুক্ত হয়। যে এসব কাজ করবে আমরা তার সঙ্গে আছি।এক প্রবীণ এলাকাবাসী বলেন, নির্বাচনের পর প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করবে তা সবারই জানা আছে। তারপরও আমি আশাবাদী।আরও পড়ুন: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বিচারব্যবস্থার সংস্কার ও পুরান ঢাকার উন্নয়নই আমাদের অঙ্গীকার: ইশরাকএ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বিএনপি প্রার্থী হামিদুর রহমান হামিদ ও জামায়াতের হাজী এনায়েত উল্লাহর। নির্বাচিত হলে নাগরিক দুর্ভোগ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন দুজনই।ঢাকা-৭ আসনের জামায়াত প্রার্থী মুহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ বলেন, গ্যাসের সমস্যা, রাস্তাঘাটের জলাবদ্ধতা, চাঁদাবাজি, জুলুম-অত্যাচার নিত্য নতুন যত সমস্যাই আসুক আগামীতে সমাধানের চেষ্টা করবো। কামরাঙ্গী চরে ১৫-২০ বছর ধরে আটকে থাকা ব্রিজের কাজ আমি শুরু করবো।এই আসনে বিএনপি প্রার্থী হামিদুর রহমান হামিদ বলেন, আমি সবার আগে যানজটের ওপর গুরুত্ব দেব। রাস্তার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। রাস্তায় যেনো পানি না জমে। নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে একটি কমিটির করবো। সরকারের সঙ্গে আলাপ করে উন্নয়নের জন্য যা করা দরকার আমি তা করবো।নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা-০৭ আসনে ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১৬০ জন।