বর্তমান সময়ে বাড়ির ইন্টারনেট কেবল ব্রাউজিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, অফিসের কাজ থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভি, সিসিটিভি ও স্মার্ট হোম গ্যাজেট সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু এখন হোম ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক। ফলে এই নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত না হলে ব্যক্তিগত তথ্য ও আর্থিক লেনদেন বড় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাউটারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস ঠিক করলেই হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা অনেকটাই কমানো সম্ভব। একই সঙ্গে বাইরে ফ্রি বা পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারের সময়ও বাড়তি সতর্কতা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক হোম ওয়াইফাই নিরাপদ রাখতে কী করবেন, আর কী করবেন না- ১. ডিফল্ট এসএসআইডি বদলানবেশির ভাগ রাউটার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডিফল্ট এসএসআইডি বা নেটওয়ার্ক নামের মধ্যেই তাদের ব্র্যান্ডের নাম রেখে দেয়। এতে বাইরে থেকে নেটওয়ার্ক স্ক্যান করলেই বোঝা যায় কোন ধরনের রাউটার ব্যবহার করা হচ্ছে, যা হ্যাকারদের জন্য টার্গেট নির্বাচন সহজ করে দেয়। করণীয়-এসএসআইডি এমনভাবে পরিবর্তন করুন, যাতে কোনও ব্যক্তিগত তথ্য বা রাউটার ব্র্যান্ডের নাম না থাকে। ২. শক্তিশালী ও ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুনডিফল্ট বা সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি। অনেকেই এখনও জন্মতারিখ বা সাধারণ শব্দ দিয়ে পাসওয়ার্ড সেট করেন, যা সহজেই অনুমান করা যায়। করণীয়-পাসওয়ার্ড অন্তত ২০ অক্ষরের রাখুন। সংখ্যার সঙ্গে বড়-ছোট হাতের অক্ষর ও বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করুন। যত জটিল পাসওয়ার্ড হবে, হ্যাকারদের কাজ তত কঠিন হবে। ৩. নেটওয়ার্ক এনক্রিপশন চালু রাখুনঅনেক রাউটারে এনক্রিপশন সুবিধা থাকলেও ডিফল্ট অবস্থায় তা বন্ধ থাকতে পারে। এনক্রিপশন ছাড়া ডাটা আদান-প্রদান হলে তথ্য সহজেই চুরি হতে পারে। করণীয়-রাউটার সেটআপের সময়ই এনক্রিপশন অন করুন। বর্তমানে WPA2 এনক্রিপশন সবচেয়ে নিরাপদ ও বহুল ব্যবহৃত মান হিসেবে বিবেচিত। ৪. নেটওয়ার্ক নাম ব্রডকাস্ট বন্ধ করুননেটওয়ার্ক নাম ব্রডকাস্ট চালু থাকলে আশপাশের যে কেউ আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক দেখতে পায়। এতে অচেনা ব্যবহারকারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। করণীয়-বাড়ির ব্যবহারের জন্য নেটওয়ার্ক নাম ব্রডকাস্ট বন্ধ রাখুন। এতে আপনার ওয়াইফাই পাবলিক ডোমেনে দৃশ্যমান হবে না এবং নিরাপত্তা বাড়বে। ৫. রাউটারের সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুনরাউটারের ফার্মওয়্যারেও নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি থাকতে পারে। এসব ত্রুটি ঠিক করতেই প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো নিয়মিত আপডেট দেয়। করণীয়-সময়মতো ফার্মওয়্যার আপডেট ও নিরাপত্তা প্যাচ ইনস্টল করুন। এতে পরিচিত নিরাপত্তা দুর্বলতা থেকে রাউটার সুরক্ষিত থাকবে। ৬. ফায়ারওয়াল চালু আছে কি না নিশ্চিত করুনঅধিকাংশ রাউটারে বিল্ট-ইন ফায়ারওয়াল থাকলেও অনেক সময় সেটি ডিফল্টভাবে বন্ধ থাকে। ফায়ারওয়াল ছাড়া নেটওয়ার্ক বাইরের আক্রমণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। করণীয়-রাউটারের ফায়ারওয়াল অন আছে কি না পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কে আলাদা ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন। ৭. ভিপিএন ব্যবহার করুনভিপিএন আপনার ইন্টারনেট ডাটাকে এনক্রিপ্টেড টানেলের মাধ্যমে পাঠায়। ফলে তথ্য চুরি বা নজরদারির ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। করণীয়-বিশেষ করে পাবলিক বা ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের সময় পিসি, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনে ভিপিএন ব্যবহার করুন। আরও পড়ুনসোশ্যাল মিডিয়া নজর রাখছে আপনার ব্যক্তিগত জীবনেওপানি ছাড়াও যেসব কারণে স্মার্টফোন নষ্ট হতে পারে কেএসকে/