সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে রাশিয়ায় চাকরি দেয়ার নামে বেকার তরুণদের টার্গেট করতো এসআরএম ওভারসিস লিমিটেড নামের রিক্রুটিং এজেন্সি। চক্রের সদস্যরা বিশ্বাস অর্জনের কৌশলে তাদের রাজি করাতো বিদেশে যাওয়ার জন্য।হাজারো স্বপ্ন বুকে নিয়ে কেউ বিক্রি করেছেন ভিটেমাটি, কেউ করেছেন ঋণ। ৬ থেকে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে রাশিয়ায় পৌঁছালেও এই বিদেশ যাত্রা যে জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তারা। সেখানে পুরো বেতন না দেয়ার পাশাপাশি নির্যাতনের অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সিন্ডিকেটের সদস্যরা রাশিয়ায় থাকা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বেতনের একটি অংশ আদায় করতো। এর প্রতিবাদ করলেই ভয় দেখিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে যেতে বাধ্য করা হতো। গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় ‘এসআরএম ওভারসিস লিমিটেড’ নামের অবৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিতে অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। মূলহোতা রুবাইয়েতের ভাই রাশিয়ায় অবস্থান করে সেখানে সিন্ডিকেট পরিচালনা করতো। আর রুবাইয়েত বাংলাদেশ থেকে লোক পাঠাতো। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নিজেদের এজেন্সির মাধ্যমে সকল চুক্তি সম্পন্ন করলেও প্রকৃত পক্ষে অন্য একটি এজেন্সির ব্যানারে আর্ন্তজাতিক মানব পাচার চক্রের সঙ্গে হাত মিলায়।’ আরও পড়ুন: বনানী থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতারকরা এখন পর্যন্ত ২০০ থেকে ২৫০ বাংলাদেশিকে রাশিয়ায় পাঠিয়েছে। দুঃখজনক, কেউই নির্ধারিত সময় তিন বছর থাকতে পারেনি। তারা দুই, চার, ছয় মাসের মধ্যে আবার বাংলাদেশে ফেরত চলে আসেন। কারণ, যারা তাদের শর্তে রাজি হয় তারা থাকতে পারে। আর যারা শর্তে রাজি হয় না তাদের জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়।’ র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যেহেতু রাশিয়াতে চক্রের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে, সেই সিন্ডিকেট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছি এবং তাদের বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেব।’