বাছবিচারহীন জামিনের দায় সংশ্লিষ্ট বিচারকের ওপর পড়ে কি না?

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারত থেকে জুলাই বিপ্লবীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। আর তার দলের অনুসারীরা গণহারে বাছবিচারহীন জামিন পেয়ে খুন করলে এর দায় সংশ্লিষ্ট বিচারকের ওপর পড়ে কি না, এমন প্রশ্ন তুলেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, স্যরি। আমি কথাটা এভাবে বলছি। এভাবে বলা ছাড়া উপায় নেই। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন। তিনি বলেন, একজন ভয়ঙ্কর ব্যক্তি জামিন পেয়ে জুলাইয়ের নায়কদের ওপর হামলা করতে পারেন। এ ধরনের জামিনে আমরা প্রচণ্ড শঙ্কিত, আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন বোধকরি। পরবর্তী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেও আমি এ বিষয়ে কথা বলবো। আইন উপদেষ্টা বলেন, যেসব ক্ষেত্রে আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্য, অধিকার; সেক্ষেত্রে বিচারকরা অবশ্যই জামিন দেবেন। কিন্তু যে অপরাধী বা যে ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে আপনাকে, আমাকে খুন করতে পারে বলে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, সে তো জামিন পেতে পারে না। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। তিনি বলেন, ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা একের পর এক আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায়, এটা জামিনের কোনো নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ আমাকে পটেনশিয়ালি খুন করতে পারে, এমন একজনকে যদি কোনো বিচারক জামিন দেন; তাহলে এই খুনের দায়-দায়িত্ব উনার ওপর পড়ে কি না সেটা উনাদের বিবেচনা করা উচিত। এ ধরনের সন্ত্রাসীদের কেউ জামিন দেবে, কোনো আইন ও নৈতিকতার দৃষ্টিতে এ এক্সেপ্টেবল নয়। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি এমন একটা দিকে গেছে যে, আমাদের সন্তানদের রক্ষার জন্য আমাদের যে কোনো এক্সচেঞ্জে, যাকে যা দরকার বলতে হবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে সংস্কারগুলা করেছি, তা টেকসই করে রাখতে রিটায়ারমেন্টের পরও আমরা প্রধান বিচারপতির পরামর্শ নেওয়ার কথা তাকে বলেছি। উনি সানন্দে সম্মতি জানিয়েছেন। আমি মনে করি যে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কোয়ালিফাইড এবং সবচেয়ে সৎ একজন প্রধান বিচারপতিকে আমরা পেয়েছিলাম। এটাও জুলাই গণভুত্থানের একটা অর্জন। পরবর্তী প্রধান বিচারপতির বিষয়ে তিনি বলেন, পরবর্তী প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন, এটা সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়। এ বিষয়ে এককভাবে কোনো কিছু বলার এখতিয়ার আমার নেই। হয়তো তিন-চারদিনের মধ্যে জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, একটা কথা নিয়ে এখনো প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। যেমন ধরেন, হাইকোর্টের কোনো কোনো বেঞ্চ অস্বাভাবিক জামিন দিচ্ছে। এটা নিয়ে আমি আমার কনসার্নের কথা প্রধান বিচারপতিকে এর আগেও জানিয়েছিলাম। আজও জানিয়েছি। উচ্চ আদালতে চার ঘণ্টায় ৮০০ মামলায় জামিন হয়েছে, এটা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব কি না। অধস্তন আদালতে কিছু কিছু জামিন হয়েছে, সেটা উচ্চ আদালতের তুলনায় খুবই কম। এফএইচ/এসএইচএস/এএসএম