চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া প্রস্তুত। তবে ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত নয়। এমন মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অন্যদিকে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে ঋণ দেয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা।আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, মস্কো বিশ্বাস করে না যে, ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। পুতিন বলেন, ২০২৪ সালে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে নীতিমালা তিনি তুলে ধরেছিলেন, তার ভিত্তিতে ইউক্রেনে সংঘাত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে মস্কো প্রস্তুত ও আগ্রহী রয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনে পুরো ফ্রন্টলাইনজুড়ে অগ্রসর হচ্ছে এবং রুশ বাহিনীর সাম্প্রতিক ভূখণ্ড দখলের অগ্রগতির প্রশংসা করেন তিনি। এদিকে নানা উদ্যোগের মধ্যেও অব্যাহত রয়েছে হামলা-পাল্টা হামলা। রাশিয়ায় রাতভর ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৩ জন। মস্কোর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক নারী। প্রায় চার বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার উদ্যোগ, দুপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মধ্যেও থেমে নেই মস্কো-কিয়েভের হামলা-পাল্টা হামলা। তারই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার দক্ষিণ রোস্তভ অঞ্চলে রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এতে দক্ষিণ বাটাইস্ক শহরে কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। আগুনে পুড়ে গেছে বেশ কয়েকটি স্থাপনা ও জাহাজ। আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে ৯০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ দিতে সম্মত ইইউ জবাবে ইউক্রেনের ওডেসায় পাল্টা হামলা চালায় রাশিয়া। এতে মা-সন্তানসহ একই পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওডেসার গভর্নর ওলেহ কিপের। হামলায় অঞ্চলটির বিদ্যুৎ অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে কয়েকটি অবকাঠামোও। নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন হাইপারসোনিক মধ্যম পর্যায়ের ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে সজ্জিত একটি সামরিক ব্রিগেড গঠন করেছে রাশিয়ার সাধারণ স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ব্রাসেলসে এক শীর্ষ বৈঠকে ইইউ নেতারা যৌথভাবে ঋণ দেয়ার পরিবর্তে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ইউক্রেনের সামরিক অর্থনৈতিক চাহিদা মেটাতে ঋণ হিসেবে দেয়ার ব্যবহার করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়ে একমত হয়েছেন। আরও পড়ুন: দাবি রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর / ২০২৫ সালে ৫ লাখ সেনা হারিয়েছে ইউক্রেন! বৈঠক শেষে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বিষয়টি নিয়ে আরও দীর্ঘ আলোচনা হবে উল্লেখ করে বেলজিয়ামসহ যেসব দেশ ভবিষ্যতে রাশিয়ার আর্থিক প্রতিশোধের ঝুঁকিতে আছে তারা দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছে বলেও জানান টাস্ক। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ২০২৬ সালে ইউক্রেনের বৈদেশিক সাহায্যে ঘাটতি হবে ৪৫-৫০ বিলিয়ন ইউরো। ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, যদি রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ঋণ হিসেবে না পেলে ড্রোন উৎপাদন উল্লেখযোগ্যহারে কমাতে হবে।