কর্মস্থল থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসে নিখোঁজ হওয়ার ২২ দিন পর আক্তারুজ্জামান (৪৬) নামে এক পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের নয়মাইল গ্রামের একটি আখক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) তার পরিচয় শনাক্ত হয়। খবর পেয়ে বিকেলে স্বজনরা মরদেহ আনার জন্য পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আক্তারুজ্জামান খুলনা রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জামলতা গ্রামে। পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাড়ে ৯ মাইল এলাকায় সুমেত আলীর আখক্ষেত থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। স্থানীয়রা ক্ষেতে ঢুকে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। প্রথমে মরদেহটি অজ্ঞাত থাকলেও পরে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও পুলিশ পরিচয় শনাক্ত করে। নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘পুলিশের পাঠানো পরনের প্যান্ট, শার্ট ও জুতার ছবি দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি মরদেহটি আমার বোনের স্বামীর। আমরা ইতোমধ্যে কয়েকজন পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। মরদেহ স্থানীয় মর্গে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। তারা থানায় পৌঁছালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। আরও পড়ুন: ট্রাকচাপায় দুজন নিহত, পুলিশ ফাঁড়ি-ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি আরও জানান, ক্লু-লেস মরদেহটির পরিচয় শনাক্তের একমাত্র সূত্র ছিল মরদেহে থাকা পুলিশের লোগো সম্বলিত অন্তর্বাস। বিষয়টি একজন পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তার পরনের প্যান্ট, শার্ট ও জুতার ছবি নিহতের স্ত্রীকে পাঠানো হয়। তিনি ছবি দেখে স্বামীর পোশাক বলে শনাক্ত করেন। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু মরদেহটি প্রায় অর্ধগলিত, তাই এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু তা বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’ যশোরের চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ‘নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শাহিনা আক্তার গত ২৮ নভেম্বর থানায় জিডি করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, তার স্বামী ২৬ নভেম্বর পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে চৌগাছায় আসেন। ২৭ নভেম্বর সকালে মহেশপুর যাওয়ার কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বাসায় রেখে যান। এরপর আমরা জানতে পারি ওই পুলিশ সদস্যের মরদেহ পঞ্চগড়ে পাওয়া গেছে।’