ইসরাইলের সঙ্গে গোপনে ইতিহাসের অন্যতম বড় অস্ত্র চুক্তি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২৩০ কোটি ডলারের এই চুক্তি হয়েছে ইসরাইলের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে। এক প্রতিবেদনে এই দাবি করেছে ফরাসি অনুসন্ধানী মাধ্যম ইন্টেলিজেন্স অনলাইন। চুক্তিটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফ্যাম।গাজা ইস্যুতে ইসরাইল যখন কূটনৈতিকভাবে একঘরে ঠিক তখনই রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র রফতানি করে প্রভাব বাড়াচ্ছে তেল আবিব। আর সেই তালিকায় এবার সামনে এলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে গোপনে মেগা অস্ত্র চুক্তির বিষয়। গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফরাসি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম ইন্টেলিজেন্স অনলাইন জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত গোপনে ইসরাইলি অস্ত্র নির্মাতা এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে ২৩০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে। গত মাসে এলবিট এই চুক্তির ঘোষণা দিলেও তখন ক্রেতার পরিচয় গোপন রাখা হয়। তারা জানায়, এখন নিশ্চিত হওয়া গেছে সেই ক্রেতা সংযুক্ত আরব আমিরাত। চুক্তির আওতায় আমিরাত কিনেছে এলবিটের উন্নত জে-মিউজিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই সিস্টেম আকাশে থাকা বিমানের দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের সেন্সর অকার্যকর করতে সক্ষম। যৌথ প্রকল্প হিসেবে এই প্রযুক্তি আমিরাতেই তৈরি হবে। এরইমধ্যে ইসরাইল সরকার সেই অনুমোদন দিয়েছে। আরও পড়ুন: মিশরের সঙ্গে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের গ্যাস চুক্তি ইসরাইলের ইসরাইলের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র চুক্তি হিসেবে বিবেচিত এই চুক্তি বাস্তবায়ন হতে আট বছর লাগবে বলে জানা গেছে। তবে অত্যন্ত সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত থাকায় চুক্তিটির বহু তথ্য এখনও গোপন রাখা হয়েছে। এটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফ্যাম। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, এই অস্ত্র বেসামরিক মানুষের ক্ষতি বা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহার করা হতে পারে। এদিকে আমিরাতের বিরুদ্ধে সুদানসহ বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত মিলিশিয়াদের সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। চুক্তি নিয়ে আমিরাত এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পর থেকেই আমিরাতে সক্রিয় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলো। আবু ধাবিতে প্রতিনিধি কার্যালয় খুলেছে এলবিট সিস্টেমস ও ইসরাইল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ। এমনকি ইসরাইলি অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করেছে আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্র যেখানে প্রযুক্তি নিরাপত্তার কারণে আমিরাতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দিতে দেরি করছে, সেখানে ইসরাইল তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি আগ্রহী সামরিক প্রযুক্তি বিক্রিতে। আঞ্চলিক জোট গড়তেই তেল আবিব এই কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আরও পড়ুন: শুকিয়ে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ইরাকের টাইগ্রিস নদী এদিকে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজা সিটিতে ইসরাইলি হামলা অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শিশুসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৪ জন। এর মধ্যে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে কাতার, মিশর ও তুরস্কের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। এছাড়া কায়রোতে বৈঠক করেছেন মিশর ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে পূর্ব জেরুজালেমে হাজার হাজার নতুন ইহুদি বসতি অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইল যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে, এটি অবৈধ দখলদারত্ব জোরদারের পাশাপাশি জেরুজালেমের রূপ পরিবর্তনের পরিকল্পনার অংশ। বসতি স্থাপনের অনুমোদনকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও গুরুতর উসকানি হিসেবে অভিতি করেছে হামাস।