সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত, উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। বিভিন্ন হাদিসে আয়াত দুটি পাঠ করার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াতকে সুরা ফাতেহার সাথে তুলনা করা হয়েছে।সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত হাদিসে বলা হয়েছে, সুরা ফাতেহা এবং সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত আল্লাহ তাআলার এমন নুর যা এর আগে কোনো নবীকে দেয়া হয়নি (মুসলিম ৮০৬)। এ ব্যাপারে হজরত আবু মাসউদ (রা.) থেকে আরও একটি হাদিস বর্ণিত আছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ قَرَأَ بِالْآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ.যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে তার জন্য তাই যথেষ্ট হয়ে যাবে। (বুখারি ৫০০৯) অর্থাৎ রাতের আমল হিসাবে এবং সকল অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এ দুটি আয়াত পাঠ করাই যথেষ্ট হয়। হজরত নুমান ইবনে বাশির (রা.) বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা আসমান-জমিন সৃষ্টির দুই হাজার বছর আগে একটি কিতাব লিখেছেন। সে কিতাব থেকে দুটি আয়াত নাজিল করে তিনি সুরা বাকারা সমাপ্ত করেছেন। যে ঘরে তিন রাত এ দুটি আয়াত তেলাওয়াত করা হয়; শয়তান ওই ঘরের কাছে আসতে পারে না। (সুনানে তিরমিজি ২৮৮২) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত اٰمَنَ الرَّسُوۡلُ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡهِ مِنۡ رَّبِّهٖ وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ؕ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ مَلٰٓئِکَتِهٖ وَ کُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ ۟ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ اَحَدٍ مِّنۡ رُّسُلِهٖ ۟ وَ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَ اَطَعۡنَا ٭۫ غُفۡرَانَکَ رَبَّنَا وَ اِلَیۡکَ الۡمَصِیۡرُ لَا یُکَلِّفُ اللّٰهُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَهَا ؕ لَهَا مَا کَسَبَتۡ وَ عَلَیۡهَا مَا اکۡتَسَبَتۡ ؕ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَاۤ اِنۡ نَّسِیۡنَاۤ اَوۡ اَخۡطَاۡنَا ۚ رَبَّنَا وَ لَا تَحۡمِلۡ عَلَیۡنَاۤ اِصۡرًا کَمَا حَمَلۡتَهٗ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِنَا ۚ رَبَّنَا وَ لَا تُحَمِّلۡنَا مَا لَا طَاقَۃَ لَنَا بِهٖ ۚ وَ اعۡفُ عَنَّا ٝ وَ اغۡفِرۡ لَنَا ٝ وَ ارۡحَمۡنَا ٝ اَنۡتَ مَوۡلٰىنَا فَانۡصُرۡنَا عَلَی الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِیۡنَ আরও পড়ুন: তাহাজ্জুদ নামাজে ওঠার কৌশলকীভাবে ইস্তিগফার করবেন উচ্চারণ: আমানার রসূলু বিমা উংঝিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহ। লা-নুফাররিকু বাইনা আহাদিম মির রুসুলিহ। ওয়া ক্বালূ সামি‘না ওয়া আত্বা‘না গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির। লা ইউকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস‘আহা লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত রাব্বানা লা তুআখিজনা ইন-নাসীনা আও আখত্ব’না রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইসরং কামা হামালতাহু আলাল্লাজীনা মিং ক্ববলিনা রব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা ত্ব-ক্বতালানা বিহ্। ওয়া’ফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা ফাংসুরনা আলাল ক্বওমিল কাফিরীন। অর্থ: রসুল তার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে নাজিলকৃত বিষয়ের ওপর ইমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ইমান এনেছে আল্লাহর ওপর, তার ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তার রসুলগণের ওপর, আমরা তার রসুলগণের মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব, আমরা আপনারই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই (আমাদের) প্রত্যাবর্তনস্থল। আল্লাহ কোনো ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। সে যা ভালো করেছে তার সওয়াব পাবে এবং মন্দ কর্মের জন্য সে নিজেই নিগ্রহ ভোগ করবে। হে আমাদের রব, আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব, আমাদের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের মার্জনা করুন এবং আমাদের ক্ষমা করুন, আর আমাদের ওপর দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।