মালয়েশিয়ায় শহীদ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত

মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (আইআইইউএম) গোমবাক ক্যাম্পাসে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় গায়েবানা জানাজা ও বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মাগরিবের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সুলতান হাজী আহমদ শাহ মসজিদ-এ এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে বিশেষ দোয়া করা হয়। এ সময় মুসল্লিরা শহীদ ওসমান হাদির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও তার শাহাদাত কবুলের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।  পাশাপাশি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা কামনায় মহান আল্লাহর বিশেষ সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। প্রবাসীরা বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও সংহতির জন্য মোনাজাত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসীরা শহীদ ওসমান হাদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, হাদি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক ও অকুতোভয় যুবক। তার এই মহিমান্বিত মৃত্যু দেশের তরুণ সমাজের কাছে চিরকাল দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা তার এই মহান আত্মত্যাগকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন। আরও পড়ুন: হাদি হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি যে আহ্বান জানালেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান উপস্থিত সকলে মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তারা প্রার্থনা করেন, যেন মহান আল্লাহ তার পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার এবং ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দান করেন।  ৩২ বছর বয়সি হাদি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখ সারির নেতা ছিলেন। তিনি ইনকিলাব মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র ছিলেন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে রাজধানী ঢাকার বিজয়নগর এলাকার ঢাকা-৮ আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছিলেন। গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) নির্বাচনী প্রচারণাকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। আরও পড়ুন: ঢাবিতে নেয়া হচ্ছে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানা যায়, গুলি ওসমান হাদির মাথার ডান দিক থেকে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে, তবে অংশবিশেষ এখনও তার ব্রেনে রয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় ওসমান হাদিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মারা যান তিনি। গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) হাদির লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।