ওসমান হাদি ছাড়াও নজরুল সমাধিসৌধে চিরনিদ্রায় শায়িত যারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সমাধিসৌধ শুধু কবির চিরনিদ্রার স্থান নয়; সময়ের পরিক্রমায় এটি পরিণত হয়েছে দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট শিল্পী, শিক্ষাবিদ ও গুণী ব্যক্তিত্বের শেষ ঠিকানায়। এখানে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির দাফনের ঘটনার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে এই নজরুল সমাধিসৌধে আর কার কার কবর রয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছানুযায়ী ঢাকার কেন্দ্রস্থলে, ধর্মীয় ও শিক্ষাঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এরপর থেকে এই সমাধিসৌধ জাতীয় স্মৃতিচিহ্নে পরিণত হয় এবং কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে আসেন। নজরুলের সমাধির আশপাশের এলাকাতেই পরবর্তীকালে সমাহিত হয়েছেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও শিক্ষাঙ্গনের কয়েকজন খ্যাতিমান ব্যক্তি। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, যিনি বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলার পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত। তার শিল্পকর্ম ও জীবনব্যাপী অবদান দেশের শিল্পচর্চাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এছাড়া এখানে সমাহিত আছেন প্রখ্যাত শিল্পী ও জাতীয় পতাকার নকশাকার কামরুল হাসান। মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে তার শিল্পকর্ম জাতীয় চেতনা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নজরুল সমাধিসৌধের পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার সমাধি শিল্প ও সংস্কৃতিপ্রেমীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। শিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে অবদানের জন্য পরিচিত প্রফেসর আব্দুল মাতিন চৌধুরী, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনিও এই সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত। এছাড়া প্রফেসর মুজাফফর আহমদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও গুণী শিক্ষক, যিনি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাকেও নজরুল সমাধিসৌধে সমাহিত করা হয়। সর্বশেষ সময়ে এই সমাধিসৌধ নতুন করে আলোচনায় আসে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির দাফনের মাধ্যমে। পরিবারের অনুরোধ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নজরুলের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়। মূলত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নজরুল সমাধিসৌধের ঐতিহাসিক ও প্রতীকী গুরুত্ব নতুন করে সামনে আসে। এফএআর/এমআইএইচএস/জেআইএম