‘মৃত্যুর আগে ছেলে আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল’, নিহত জান্নাতের মা

‘মৃত্যুর আগে ছেলে আমার দিকে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল, আমি এই শোক কেমন করে সইবো।’ শনিবার সকালে (২০ ডিসেম্বর) সকালে কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার নয়ানগর গ্রামে দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে নিহত জান্নাত হোসেনের (২৭) মা জাহানারা বেগম।তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল, তাকে ডেকে নিয়ে যায় তাসলিমা, আমি পিছনে পিছনে যাই, ঘরে যেতে না যেতেই ওরা আমার ছেলেকে দা দিয়ে কোপাতে থাকেন। আমার ছেলে আমার দিকে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল।’জাহানারা বেগম দাবি করে বলেন, ‘ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’এর আগে শনিবার সকালে (২০ ডিসেম্বর) উপজেলার নয়ানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।স্বজনদের দাবি, কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জান্নাত হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত দুই ভাই।আরও পড়ুন: বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাটনিহত জান্নাত হোসেন একই এলাকার আব্দুল হকের ছেলে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় শাহীন রাঢ়ীর তিন ছেলের মধ্যে তারেক (৩২) ও রিয়াদ (২৭) দুজনই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। কদিন পরপরই নিজেদের মধ্যে মারামারি, ঝগড়াঝাটি করেন তারা। শনিবার সকালে তারেক আর রিয়াদের মধ্যে ঝগড়া বাধলে প্রতিবেশী জান্নাতকে ডেকে আনেন তাদের মা তাসলিমা বেগম।তাসলিমা বেগম জানান, এ সময় তার দুই ছেলের হাতেই রামদা ছিল।আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে যুবক খুননিহতের বড় ভাই রাজু রাঢ়ী বলেন, ‘বাড়ির সীমানা নিয়ে ওদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল, জোরপূর্বক আমাদের জায়গা দখল করে ঘর তুলে রাখছে, আমার ভাইকে যখন কোপায় তখন তারা কাউকে ঘরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুই ভাই। স্বজনরা তাৎক্ষণিক পার্শ্ববর্তী হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।’এ বিষয়ে হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মারিয়া মোস্তারি বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হতে পারে বলে জানান তিনি।এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আলী বলেন, ‘অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’