গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত, উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান মধ্যস্থতাকারীদের

ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো সংযত থাকলেও গাজায় ইসরাইলের হামলা চলছেই। তবে যুদ্ধবিরতিতে অংশ নেয়া দুই পক্ষকে তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলা এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, কাতার ও তুরস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি শহরে আলোচনার পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ এমনটাই জানিয়েছেন।এক্স-এ উইটকফ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রতি আমাদের পূর্ণ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি এবং সকল পক্ষকে তাদের বাধ্যবাধকতা বজায় রাখার, সংযম প্রদর্শনের এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ গত ১০ অক্টোবর কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় থামেনি ইসরাইলি বর্বরতা। প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বনি সুহেইলা এলাকায় একাধিক বিমান হামলা চালায় নেতানিয়াহু বাহিনী। বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে। একই দিন গাজা সিটির তুফ্ফাহ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় নারী ও শিশুসহ অনেকে নিহত হন। চলাচলে বিধিনিষেধ এবং হামলার কারণে ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। ইসরাইলের দাবি, গাজায় অভিযান চলাকালীন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। আরও পড়ুন: গাজায় আর দুর্ভিক্ষ নেই, জানিয়েছে বিশ্ব ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ সংস্থা গাজায় অব্যাহত হামলার মধ্যেই এদিন মিয়ামিতে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, কাতার ও তুরস্কের প্রতিনিধিরা। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অগ্রগতি মূল্যায়ন করেন তারা। এ সময় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, মরদেহ হস্তান্তর, আংশিক সেনা প্রত্যাহার এবং সহিংসতা কমানোকে প্রথম ধাপের অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বৈঠকে দ্বিতীয় ধাপের জন্য গাজায় স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসন গঠন, বেসরকারি ও নিরাপত্তা কাজ পরিচালনার পরিকল্পনা এবং অবকাঠামো ও বাণিজ্যসহ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস বলেন, গাজার পরিস্থিতি এখনো বিপজ্জনক। ১৬ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্যসংকট ও অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। কিছু এলাকায় পরিষ্কার পানি পৌঁছেছে, স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুনরায় খোলা হয়েছে। তবে শীত ও বৃষ্টি শিশুদের জন্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আরও পড়ুন: সিরিয়ায় বড় পরিসরে হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করতে এবং সহায়তা পৌঁছাতে সীমান্ত ক্রসিং খুলতে হবে। একইসঙ্গে, বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে নির্বিঘ্নে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, শীতে গাজায় শিশু ও নবজাতকেরা মারা যাচ্ছে। খান ইউনিসে ২৯ দিনের নবজাতক হাইপোথার্মিয়ায় মারা গেছে। আশ্রয় ও কাপড় না পেয়ে প্রাণ গেছে দুই সপ্তাহ বয়সী আরেক শিশু। সংস্থাটি জানায়, শীতের কারণে শ্বাসপ্রশ্বাসের সংক্রমণ বাড়ছে, যা পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।