চীন থেকে প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। দেশটির অর্থে রয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পও। অথচ আর্থিক লেনদেনে দেশে নেই কোনো চীনা ব্যাংক। এতে আমাদনিতে কয়েক ধাপের মুদ্রা পরিবর্তনে ব্যয় বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। এমন প্রেক্ষাপটে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশের দুর্বল কোনো ব্যাংক কিনে নিতে চায়না দূতাবাসে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চীনা ব্যাংক থাকলে সহজ হবে লেনদেন, চাপ কমবে ডলারের ওপর।বিশ্বের যে দেশ থেকেই পণ্য আমদানি করা হোক না কেন, বাংলাদেশকে সংশ্লিষ্ট দেশের পণ্য কিনতে হলে প্রথমে টাকা থেকে ডলার, ডলার থেকে সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রায় অর্থ পরিশোধ করতে হয়। এতে বিভিন্ন চার্জসহ ব্যয় বাড়ে একাধিকবার। দিন শেষে যার প্রভাব পড়ে পণ্যের মূল্যে। এমন প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি ব্যয় বাড়ে বাংলাদেশে শীর্ষ রফতানিকারক দেশের পণ্য কিনতে। এর মধ্যে মোট আমদানির ২৫ ভাগই আসে চীন থেকে। রয়েছে বিনিয়োগ, বাণিজ্য, চিকিৎসাসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাংলাদেশের একক বৃহত্তম অংশীদারিত্ব। কিন্তু আর্থিক লেনদেনে বাংলাদেশে নেই কোনো চীনা ব্যাংক। এতে ভোগান্তিতে পড়েন আমদানিকারকরা। বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী বলেন, চীন থেকে যারা আমদানি করেন, ব্যাংক থাকলে তাদের জন্য লেনদেনের একটা ভালো সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অনেকগুলো প্রকল্প আছে। প্রকল্পগুলোর লেনদেন নিয়েও সরকারের একটা ভালো সুবিধা হবে। আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনে আন্দোলন করতে হবে: গভর্নর পেক্ষাপট যখন এমন, তখন ভিন্ন চিন্তা করছে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার। সভাপতি মোহা. খোরশেদ আলম জানান, দুদেশের বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশের যে কোনো একটি দুর্বল ব্যাংক কিনে নিতে পারে চীন। এছাড়া কারিগরি দক্ষতা বিনিময়ের প্রস্তাবও দিয়েছে চেম্বার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চীনের ব্যাংক থাকলে এলসিতে এক শতাংশ খরচ কমবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমাদের ২০টি ব্যাংকের অবস্থা খারাপ। এক্ষেত্রে এখান থেকে একটা ব্যাংক তারা কিনে নিতে পারেন। চীন বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে বলছেন অর্থনীতিবিদরা। এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, এখানে চাইনিজ ব্যাংক থাকলে এবং তারা আমাদের ন্যাশনাল রেগুলেশনের চেয়ে চেয়ে ভালো রেগুলেশনে মূলধন দিতে পারেন, তবে হয়ত আমাদের একটা মুক্তির উপায় হবে। আরও পড়ুন: ধার করে নয়, রিজার্ভ নিজেদেরকেই বাড়াতে হবে: গভর্নর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে ১৬ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। বিপরীতে দেশটিতে রফতানি হয় ৭১৫ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার।