থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সংঘাতময় পরিস্থিতি সামাল দিতে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে শিগগিরই একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আশাও দেখছে দেশটি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, সোমবারের (২২ ডিসেম্বর) মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকরে উভয় দেশকে রাজি করানো সম্ভব।থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সীমান্তবর্তী এলাকায় এক হাজারের বেশি স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে পরিবার ও শিক্ষার্থীরা। সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে দূরবর্তী উপকূলেও। থেমে গেছে মাছ ধরা, স্থবির হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাজার। এর পাশাপাশি অনিশ্চয়তায় পড়েছেন থাইল্যান্ডে অবস্থানরত লাখো কম্বোডীয় অভিবাসী শ্রমিক। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি শুরু হওয়ায় সীমান্তবর্তী ১ হাজার ৬০টি স্কুল একযোগে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয় থাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বুরিরাম প্রদেশে একশোর বেশি স্কুল বন্ধ। শিশু ও কিশোরদের বড় একটি অংশ পরিবারসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে। যেখানে পড়াশোনা ও স্বাভাবিক শৈশব, দুটোই থমকে গেছে। আরও পড়ুন: তাইওয়ানে মেট্রো স্টেশনের কাছে ছুরি হামলা, নিহত ৪ সংঘর্ষের প্রভাব সীমান্ত ছাড়িয়ে পড়েছে থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় ট্রাট প্রদেশের উপকূলেও। নিরাপত্তাজনিত কারণে নৌবাহিনীর নির্দেশে সাময়িকভাবে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কাজ হারিয়েছেন জেলেরা, বন্ধ হয়ে গেছে আয়ের একমাত্র পথ। স্থানীয় চেম্বার অব কমার্স বলছে, আয় বন্ধ হলেও ঋণের বোঝা থেকেই যাচ্ছে, যা চরম সংকটে ফেলেছে উপকূলীয় অর্থনীতিকে। মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সরাসরি প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে। যেখানে প্রতিদিন শত কেজির বেশি সামুদ্রিক মাছ ও চিংড়ি বিক্রি হতো, এখন তা নেমে এসেছে এক-পঞ্চমাংশে। একই সঙ্গে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন থাইল্যান্ডে থাকা পাঁচ লাখের বেশি কম্বোডীয় অভিবাসী শ্রমিক। যারা না পারছেন দেশে ফিরতে, না নিশ্চিত করতে পারছেন কাজের ভবিষ্যৎ। সব মিলিয়ে তাদের জীবন এখন স্থবির হয়ে পড়েছে। আরও পড়ুন: আরেকটি দুর্নীতি মামলায় ইমরান খান ও তার স্ত্রী’র ১৭ বছরের কারাদণ্ড এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াকে আবারও ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ওয়াশিংটন। স্থানীয় সময় শুক্রবার তিনি বলেন, সোমবারের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দুই দেশকে রাজি করানো সম্ভব হবে বলে তারা আশাবাদী।