‘৮ বছরের মাসুম বাচ্চা আয়েশাকে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। তার বাবা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, সেখানে কাতরাচ্ছে। পোড়ার যন্ত্রণা যে কত কঠিন কত ভয়াবহ, কত বেদনাদায়ক, এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তার বড়ো মেয়ে স্মৃতি জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে লড়াই করছে। কে দেবে তাদের সান্ত্বনা দেবে, কে তাদের সহায় হবে, কে তাদের রক্ষা করবে।’ রোববার (২১ ডিসেম্বর) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা গ্রামে দুর্বৃত্তদের আগুনে দগ্ধ বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়ি পরিদর্শন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্থিতিশীল ও শান্তিতে থাকুক এটা শেখ হাসিনা চায় না। এখানে মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়িতে ফিরুক তা হাসিনা ও তার দোসররা চায় না। হাসিনা তার আত্মীয়-স্বজন নিয়ে পালিয়ে গেছে, কিন্তু দোসররাতো আছে। রিজভী বলেন, দোসররা পুলিশ-প্রশাসন-সরকারি দপ্তরসহ সব জায়গায় আছে। প্রত্যেকটি জায়গা থেকে তারা অনেকগুলো ষড়যন্ত্র চক্রান্তের নীল নকশা বুনছে। জাল বুনছে কীভাবে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নস্যাৎ করা যায়, বানচাল করা যায়। এদিন রাতে আগুনে পুড়ে নিহত হওয়া শিশু আয়েশা আক্তারের (৮) কবর জিয়ারত করেন রিজভীসহ নেতাকর্মীরা। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজে দগ্ধ সালমা আক্তার স্মৃতি (১৭) ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনকে দেখতে যান রিজভী। রিজভী আরও বলেন, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে সামনে শান্তিপূর্ণ না দেখানো, বাংলাদেশ আর চলতে পারছে না মুখ থুবড়ে পড়ছে, এসব দেখানো হাসিনা ও তার দোসরদের মূল উদ্দেশ্য। সেভাবেই তারা কাজ করছে। এই ভয়ংকর চক্রান্ত এখানে চলছে। তারা যে সুখে শান্তিতে বাংলাদেশ থেকে লুটপাট করেছে, সে লুটপাট করতে তো আর পারছে না, পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা পাচার করতে, পারছে না সোনালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের টাকা পাচার করতে। পারছে না তারা সরকারি প্লট আত্মসাৎ করতে। বেআইনিভাবে হাসিনা নিজের ছেলে মেয়ে ভাগ্নে ভাগ্নির নামে প্লট নিয়েছে পূর্বাচলে। অথচ তার বাড়ি আছে, তার বোনেরও বাড়ি আছে। তারা মনে করেছিল কেয়ামত পর্যন্ত সুখে শান্তিতে থাকবে, এটি যখন হাতছাড়া হয়ে গেছে, তারা আর বাংলাদেশকে নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে থাকতে দিতে চায় না। তিনি বলেন, দূর থেকে কেউ সূতা নাড়াচ্ছে। আমরা যে পুতুল খেলা দেখেছি বিভিন্ন হাটে ঘাটে মেলায়, সেই পুতুল নাচ নাচাচ্ছে কেউ, সূতার টান দিচ্ছে কোথাও থেকে। শেখ হাসিনার আমলে ১৫ বছর লক্ষ্মীপুর ছিল রক্তাক্ত ও ভয়ের জনপদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাবুদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলালের ঘরে দুর্বৃত্তদের আগুনে তার মেয়ে আয়েশা মারা যায়। এছাড়া বেলালসহ তার দুই মেয়ে স্মৃতি ও সামিয়া আক্তার বিথি (১৪) দগ্ধ হয়। কাজল কায়েস