অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ক প্রশ্ন তুলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) প্রযুক্তির খরচ কেন আইসিসি বহন করে না। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে যে অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে অ্যাশেজ সিরিজে—তা এড়াতে সব ম্যাচে অভিন্ন সরবরাহকারীর প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত।চলমান অ্যাশেজ সিরিজজুড়ে রিয়েল টাইম স্নিকো (আরটিএস) ব্যবহার করে নেওয়া একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড—দু’দলই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। অ্যাডিলেড টেস্টে এসে সেই অসন্তোষ চরমে পৌঁছায়। প্রথম দিনের সেঞ্চুরিয়ান অ্যালেক্স ক্যারির একটি আউটের সিদ্ধান্ত ভুলভাবে বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের সকালে ইংল্যান্ডের একটি রিভিউ পুনর্বহাল করেন ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো। স্নিকোর সরবরাহকারী বিবিজি স্পোর্টস স্বীকার করে নেয়, অপারেটরের ভুলের কারণেই ওই ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছিল।দ্বিতীয় দিনের আরেকটি ঘটনায় স্টাম্প মাইকে স্টার্ককে বলতে শোনা যায়, ‘স্নিকোকে বাদ দেওয়া উচিত।’আরও পড়ুন: শান্তর কাঁধেই রাজশাহীর নেতৃত্বএই ভুলের প্রেক্ষিতে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) আইসিসির কাছে তাদের প্রোটোকল ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি পর্যালোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে চায়। আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয় হবে—স্বাগতিক সম্প্রচারকারী সংস্থাগুলোকেই কেন এই প্রযুক্তির খরচ বহন করতে হয়। স্টার্কের মতে, পুরো প্রক্রিয়াটিই কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হওয়া দরকার।স্টার্ক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, এটা সবার জন্যই হতাশাজনক—দর্শক, ম্যাচ অফিসিয়াল, সম্প্রচারকারী—সবার জন্য। আমি শুধু নিজের পক্ষ থেকে বলছি—অফিশিয়ালরাই তো এটি ব্যবহার করেন, তাই না? তাহলে আইসিসি কেন এর খরচ দেয় না? আর সব জায়গায় কেন একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না? সব সিরিজে যদি একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, তাহলে হয়তো বিভ্রান্তি ও হতাশা কমবে। এটাই আমার বক্তব্য।’বর্তমানে আইসিসির অনুমোদিত ‘সাউন্ড-ভিত্তিক এজ ডিটেকশন প্রযুক্তি’র দুটি সরবরাহকারী রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহৃত হয় আরটিএস, আর বিশ্বের বাকি অংশে ব্যবহৃত হয় আল্ট্রাএজ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং তৃতীয় টেস্ট চলাকালীন বলেন, আম্পায়াররা আরটিএসের ওপর ‘ভরসা করতে পারেন না’ এবং তার মতে আল্ট্রাএজ তুলনামূলকভাবে ভালো।আরও পড়ুন: বিপিএলে ফিক্সিং ঠেকাতে সিআইডির সঙ্গে বিসিবির ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের প্রধানের বৈঠকঅস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স কূটনৈতিক ভঙ্গিতে কথা বললেও স্বীকার করেন, আরটিএস আল্ট্রাএজের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন মনে হয়। তার ভাষায়, ‘এখানে যেটা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা বিদেশে যেটা দেখি তার থেকে একটু আলাদা মনে হয়। এ নিয়ে সবসময়ই কিছু ফিসফাস থাকে। আপনি যদি বোলিং দল হন, আশা করেন যেন সিদ্ধান্তটা আপনার পক্ষে যায়। আর আপনি যদি ব্যাটিংয়ে থাকেন, অনেক সময় নিশ্চিত হতে চান সব ঠিকঠাক আছে কি না, এমনকি আপনি মনে করলেও যে ব্যাট লাগেনি। ধারাবাহিকতার অভাব মাঝে মাঝে চোখে পড়ে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয়।’যদিও বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) আল্ট্রাএজ ব্যবহার করা হয়, তবে সিরিজের মাঝপথে প্রযুক্তি পরিবর্তনের কোনো বিধান নেই। ফলে মেলবোর্ন ও সিডনিতে অনুষ্ঠিতব্য শেষ দুই টেস্টেও আরটিএসই ব্যবহার করা হবে।