শিরোনাম পড়ে পাঠকের ক্ষোভ জাগতে পারে। ‘হু, স্বপ্নের বছর! বাংলাদেশ কি বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছে নাকি!’ বিশ্বকাপ জিতেনি। তাও টি-টোয়েন্টিতে ২০২৫ সালটা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ। বিশেষ অনেকগুলো কারণে।সর্বোচ্চ ম্যাচ ও সিরিজ জয়টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ এই বছর নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১৫ ম্যাচ জিতেছে। অবশ্য ম্যাচসংখ্যাও ছিল অন্য বছরগুলোর তুলনায় বেশি। ৩০ ম্যাচের মধ্যে ১৪টিতে হেরেছে, একটি পরিত্যক্ত। জয়ের অনুপাত ১.০৭১। অনুপাতের হিসাবে সবচেয়ে সফল বছর ২০২৩, সে বছর ১৪ ম্যাচ খেলেই জিতেছিল ১০টিতে। তাও ২০২৫ এর বিশেষত্ব কমছে না।এই ১৫ জয় বাংলাদেশকে ৮টি সিরজের মধ্যে ৫টিতে জয় এনে দিয়েছে। যদিও বছরটা শুরু হয়েছিল খুবই বাজেভাবে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হার দিয়ে, এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ। পরের সিরিজেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার মাটিতে জিতে ২-১ ব্যবধানে, ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যবধান একই। নেদারল্যান্ডসকে হারায় ২-০ ব্যবধানে। অক্টোবরে দুবাইয়ে আফগানিস্তানকে করে হোয়াইটওয়াশ। এরপর আরেকটি সিরিজ হার। বছর শেষ করে আয়ারল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে। ২০২৫ সালের আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সিরিজ জয় ছিল ২০২১ ও ২০২৩ সালে, ৩টি করে।দুশোর বেশি ছক্কাটি-টোয়েন্টি ২০ ওভার বা ১২০ বলের ম্যাচ। ফরম্যাটটিকে তাই বলা হয় ছক্কার খেলা, চারেরও কি নয়? এবার নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুইশর বেশি ছক্কা মেরেছে লিটন কুমার দাসের নেতৃত্বাধীন দল, চার মেরেছে ২৯৮টি। ছক্কার সংখ্যাটা কত?–২০৬। যা ভারত, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের চেয়েও বেশি! এদের চারও বাংলাদেশের চেয়ে কম। অবশ্য এই পাঁচ দলই বাংলাদেশের চেয়ে কম ম্যাচ খেলেছে।আরও পড়ুন: আইপিএল চলাকালীন মোস্তাফিজ শুধু ৮ দিনের জন্য বাংলাদেশেরমহত্বটা বাড়ছে অতীতের দিকে তাকালে। টি-টোয়েন্টিতে পর্যাপ্ত ছক্কা মারতে না পারায় নিয়মিতই সমালোচিত হওয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বছর ছিল ২০২৪, সে বছর মেরেছিল ১২২ ছক্কা। অজুহাত হিসেবে নানা সময় নিজেদের শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে সামনে এনেছেন ক্রিকেটাররা। ছক্কা মারায় মূল খেলটা দেখিয়েছেন তানজিদ তামিম। ৪১টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। আগস্টে দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সাইফ হাসান ১৫ ইনিংসেই মেরেছেন ২৯ ছক্কা।তিনজন ব্যাটারের পাঁচশোর্ধ্ব রানরান তোলায়ও বাংলাদেশের ব্যাটাররা এবার রেকর্ড গড়েছেন। ২০২৫ সালের আগে বাংলাদেশের একাধিক ব্যাটার একই বছরে পাঁচশ প্লাস রান করতে পারেননি। এবার পাঁচশর বৈতরণী পেরিয়েছেন তিন জন। সর্বোচ্চ ছক্কা মারা তানজিদ তামিম ২৭ ম্যাচে করেছেন ৭৭৫ রান, লিটন ২৫ ম্যাচে ৬৩৫, আর পারভেজ হোসেন ইমন ২৩ ম্যাচে ৫১৯। এদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো স্ট্রাইকরেট ইমনের, ১৩৭.৬৬ স্ট্রাইকরেটে বল করেছেন তিনি। তামিম ১৩৫.২৫ ও লিটন ১৩২.২৯ স্ট্রাইকরেটে।রিশাদ হোসেন বোলিংয়ে গত বছরই রেকর্ড গড়েছিলেন। ২৪ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩৫ উইকেট। এবার নিয়েছেন ৩৩টি। মোস্তাফিজুর রহমান ২৬, তাসকিন আহমেদ ২৪, তানজিম হাসান সাকিব ২৩ ও মেহেদী হাসান ২২ উইকেট শিকার করেছেন।