অবশেষে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার, বেড়েছে লেনদেন

টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। সেই সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কমে লেনদেনের গতি। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও মূল্যসূচকের পতন হয়। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। এ পরিস্থিতিতে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এতে দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩০২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৭টির। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৬টির দাম কমেছে এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬৫টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৪টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৭১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৫ কোটি ৯৪ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৩ কোটি ৩০ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১০২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সায়হাম কটনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার। ১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কে অ্যান্ড কিউ। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রহিমা ফুড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং এবং মুন্নু ফেব্রিক্স। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫০টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এমএএস/এমআইএইচএস/এএসএম