মালদ্বীপে হয়ে গেলো দুইদিন ব্যাপী বাংলাদেশ মেডিকেল এডুভেস্ট শিক্ষা প্রদর্শনী-২০২৫

মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুইদিন ব্যাপী বাংলাদেশ মেডিকেল এডুভেস্ট শিক্ষা প্রদর্শনী-২০২৫। দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই শিক্ষা প্রদর্শনী ঢাকা এবং মালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথম ও সবচেয়ে বড়। যা শিক্ষা কূটনীতি ও জনকূটনীতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।শুক্র (১৯ ডিসেম্বর) ও শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানী মালের বিলাসবহুল বার্সেলো নাসন্ধুরার কনভেনশন সেন্টারে এই শিক্ষা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দুইদিন ব্যাপী সফলভাবে শেষ হয় এই আয়োজন। আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে মালদ্বীপে উদযাপিত হলো মহান বিজয় দিবস  এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালদ্বীপ সরকারের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আমিনাথ শিরনা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উচ্চশিক্ষা, শ্রম ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. আবদুল রহীম হাসান ও দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, বাংলাদেশ থেকে আগত স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।  এছাড়াও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন, আর উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ এবং সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এই ঐতিহাসিক শিক্ষা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে শীর্ষ ১৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রায় ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মালদ্বীপ সফর করেন।  প্রদর্শনীর শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)-এর সেক্রেটারি ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষায় মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন। এরপর অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করেন। একইসাথে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, উপযোগী ও স্বাচ্ছন্দ্যময় শিক্ষার পরিবেশ প্রদান করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশ ও মালদ্বীপকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই এক্সপো শিক্ষা কূটনীতি ও জনকূটনীতির একটি বাস্তব উদাহরণ, যা তার প্রবর্তিত ধারণা ‘পাওয়ার অব বন্ডিং’ বা সম্পর্কের শক্তিকে সুদৃঢ় করে। তিনি বলেন, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও জনগণের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ–মালদ্বীপ বন্ধুত্ব এগিয়ে যাচ্ছে। মালদ্বীপীয় শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে ইন্টার্নশিপের জন্য কোনো অতিরিক্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জানান, বাংলাদেশ সরকার মালদ্বীপীয় শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজে ৭টি পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি, যার মধ্যে ১টি ডেন্টাল শিক্ষার জন্য, বরাদ্দ রেখেছে। পাশাপাশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো তুলনামূলকভাবে কম খরচে উচ্চমানের মেডিকেল শিক্ষা প্রদান করছে। এদিকে, প্রধান অতিথির বক্তব্যে মালদ্বীপের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আমিনাথ শিরনা বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষা গ্রহণে মালদ্বীপীয় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে আরও কার্যক্রম আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উদ্বোধনী পর্ব শেষে শিক্ষা প্রদর্শনীর মূল কার্যক্রম শুরু হয়। অংশগ্রহণকারী ১৫টি মেডিকেল কলেজ তাদের এমবিবিএস প্রোগ্রাম, সুযোগ-সুবিধা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করে। এ সময় বাংলাদেশ হাইকমিশনার এবং মালদ্বীপের উচ্চশিক্ষা, শ্রম ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। এই শিক্ষা প্রদর্শনীতে বিপুল সংখ্যক মালদ্বীপীয় শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং বিভিন্ন স্টল ঘুরে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনকারী একাধিক মালদ্বীপীয় চিকিৎসকও উপস্থিত থেকে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষা গ্রহণে আস্থা আরও বাড়িয়ে তোলে।