‘নতুন সংকটে ঢাকা–দিল্লি সম্পর্ক,’ ‘অপশক্তি রুখতে ঐক্যের ডাক’

প্রতিদিন পাঠকের কাছে দেশের আলোচিত ঘটনা, রাজনৈতিক উত্তাপ, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সমাজের পরিবর্তন এবং বিশ্বমঞ্চের নতুন বার্তা তুলে ধরে সংবাদপত্রগুলো। তথ্যপিপাসুদের তথ্যের চাহিদা মেটাতে সময় সংবাদ দেশের প্রধান প্রধান সংবাদপত্রের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম পাঠকের সামনে তুলে ধরছে। এক নজরে জেনে নিন দেশের প্রধান সংবাদপত্রগুলোর প্রতিবেদন।দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত কিছু খবর নিচে তুলে ধরা হলো। নতুন সংকটে ঢাকা–দিল্লি সম্পর্ক - দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর এটি। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঢাকা ও দিল্লিতে দুই দেশের হাইকমিশনারদের পাল্টাপাল্টি তলবের ঘটনা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। গত শনিবার রাতে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।   এরই মধ্যে গত সোমবার সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে হামলা করেছে হিন্দুত্ববাদী তিনটি সংগঠন। এরপর ভিসা কেন্দ্রটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়েটদের দক্ষতা খুবই নিম্নস্তরে - দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান সংবাদ এটি। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে চাকরিদাতারা কর্মী নিয়োগে গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে যে ধরনের দক্ষতা প্রত্যাশা করেন সে রকম মানবসম্পদ তৈরিতে বেশ পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। কিউএস ওয়ার্ল্ড ফিউচার স্কিলস ইনডেক্স ২০২৫-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে।   ইনডেক্সটি তৈরিতে প্রায় ৫০ লাখ চাকরিদাতার মতামত, বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং, গবেষণা পরিস্থিতিসহ আরো কিছু বিষয়কে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এ ইনডেক্সে ১০০ স্কোর মানের বিপরীতে চাকরিদাতাদের চাহিদানুযায়ী গ্র্যাজুয়েটদের দক্ষতা, একাডেমিক প্রস্তুতি, অর্থনৈতিক রূপান্তর, ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান—এ চার সূচকে স্কোর প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশে আরেক দফা ধাক্কা - দৈনিক মানবজমিনের প্রথম পাতার খবর এটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদীয়মান রাজনৈতিক নেতা শরিফ ওসমান হাদি হত্যার পর বাংলাদেশে আবারও সহিংসতার নতুন ঘূর্ণাবর্ত শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ভারতবিরোধী বক্তব্য এবং নানা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব- সব মিলিয়ে এমন এক সময়ে দেশে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ছে, যখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন স্থিতিশীলতা ও দিকনির্দেশনা।   সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে যে প্রতিবাদ আন্দোলন হয়েছিল, তার অন্যতম নেতা ছিলেন হাদি। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন এবং প্রায়ই নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতেন। ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা টেলিগ্রাফের এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে। অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি - দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান খবর এটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবসর ভাতার আবেদন করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবশ্যই ইনডেক্স (পরিচয় শনাক্তকারী নম্বর) থাকতে হবে। এই শর্ত ঠিক রেখেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ইনডেক্সধারীদের অবসর ভাতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আবেদন না করেও অনেকে এই ভাতা পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অর্থ ব্যয় এবং পরিচালনায় এমন অনেক অনিয়ম ও অসংগতি পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদফতর।   শিক্ষা অডিট অধিদফতরের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আইন লঙ্ঘন করে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানত ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন শিক্ষা অডিট অধিদফতরের এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জমা দেয়া হয়েছে। অপশক্তি রুখতে ঐক্যের ডাক - দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান খবর এটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মব সন্ত্রাস আর জ্বালাও-পোড়াওয়ের শিকার এখন গণমাধ্যম। সাংবাদিকরাও আর নিরাপদ নন। পরিস্থিতি এমন স্তরে গিয়ে পৌঁছেছে যে, মত প্রকাশ তো দূরের কথা, বেঁচে থাকাই কঠিন বলেও কথা উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, উদ্যোক্তা, সম্পাদক, পেশাজীবী, কবি, শিক্ষক, ব্যাংকারসহ সর্বস্তরের মানুষই এখন বলছেন, এমন বাংলাদেশ তো কেউ চায়নি।   বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেমন বলেছেন, তিনি এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেননি, তেমনি অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও হতাশা প্রকাশ করেছেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যেমন মবতন্ত্রের উত্থান নিয়ে কথা বলেন, তেমনি মবে আক্রান্তের শিকার পত্রিকা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম গণমাধ্যমের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি স্পষ্ট করেন। ছোট দলের প্রার্থী আত্তীকরণের কৌশল নিয়েছে বিএনপি - দৈনিক সমকালের প্রধান খবর এটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী জোট গঠনে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র এবং নির্বাচনী জোট করতে চাওয়া দলগুলোর ক্ষেত্রে এ প্রভাব এরই মধ্যে সামনে এসেছে।   নতুন আরপিও অনুযায়ী জোট করলেও নিবন্ধিত দল হিসেবে প্রার্থীকে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। এতে বিএনপির সঙ্গে জোট করেও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ না থাকায় অন্তত দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা নিজ দল বিলুপ্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়ে প্রার্থিতা নিশ্চিত করেছেন।  নতুন কোনো বার্তা দেবেন কি - দৈনিক যুগান্তরের প্রধান খবর এটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক জল্পনা-কল্পনা ও প্রত্যাশার পর অবশেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই দেশের ফিরে আসার ঘটনা দেশের রাজনীতির জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। তাদের মতে, দেশের বিভক্ত তথা বিবদমান এই সমাজে সবাই এখন তারেক রহমানের দিকেই তাকিয়ে আছেন। ফলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার ব্যবস্থার দায়িত্ব তাকেই গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনে সহিংসতা পরিহার, সব গোলযোগ দমন এবং দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাও নির্ভর করছে তার ওপর।   এই প্রক্রিয়ায় অনেক দলকে বেশ কিছু আসনে ছাড় দিয়ে হলেও একটি সুন্দর পরিবেশের উদ্যোগ গ্রহণ কেবল তারেক রহমানই পারেন। এমনকি নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়টিও আলোচনায় আনতে পারেন তারেক রহমান। এসব কারণ বিবেচনায় রেখে কেউ কেউ বলছেন, ফিরে আসার পর দেশের রাজনীতিতে নতুন কিছু চমক দেখাতে পারেন তিনি।