নির্বাচনের আগে এক ব্যক্তির নামে সিম সংখ্যা আরও কমাচ্ছে সরকার। পহেলা জানুয়ারি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সর্বোচ্চ ৫টি নতুন সিম নিতে পারবেন মোবাইল গ্রাহকরা। আর যাদের নামে ৬ থেকে ১০টি সিম কার্ড রয়েছে, সেই সংখ্যাও পাঁচে নামানো হবে ধাপে ধাপে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে বরাবরের মতোই আপত্তি তুলেছেন মোবাইল অপারেটররা।রাস্তাঘাটে মোবাইল সিম কেনার সময় গ্রাহকের অজান্তেই বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। যা দিয়ে অবৈধভাবে নিবন্ধন হচ্ছে অতিরিক্ত সিম। অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পর্যালোচনায়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, একদিনেই একজন গ্রাহক দুইয়ের বেশি সিম কিনছেন। যা অস্বাভাবিক। এ পরিস্থিতিতে মোবাইল-ভিত্তিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গত জুলাইয়ে এক ব্যক্তির নামে সিম নেয়ার সীমা ১৫ থেকে ১০টিতে নামানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এই সীমা আরও কমাচ্ছে সরকার। জানিয়েছে, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম নিবন্ধন করতে পারবে। আরও পড়ুন: এনইআইআর চালু নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানাল বিটিআরসি বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, পহেলা জানুয়ারিতে যিনি নতুন করে সিম নিবন্ধন করতে যাবেন, তার নামে পাঁচটির বেশি সিম নিবন্ধন করা হবে না। বিটিআরসির তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৫ গ্রাহকের হাতে আছে ১৮ কোটি ৮০ লাখের বেশি সিম। এর মধ্যে ৮০ শতাংশের নামে আছে ১ থেকে ৫টি সিম, আর ৬ থেকে ১০টি সিম কার্ড রয়েছে এক কোটি ২০ লাখ গ্রাহকের কাছে। এমদাদ উল বারী আরও বলেন,যার কাছে ১০টির বেশি সিম আছে, সে যখন সিম রিপ্লেস করতে যাবে, তাকে সিম সংখ্যা পাঁচটিতে নামাতে বলা হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সিদ্ধান্তে গ্রাহকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছেন, যাদের ভোটার আইডি নেই, তারা সিম কীভাবে নিবন্ধন করবে? আবার কেউ মনে করছেন, পরিবারের চার সদস্য থাকলে ৫টি করে সিমের মাধ্যমে মোট ২০টি সিমের সুযোগ আছে, যা যথেষ্ট। তবে মোবাইল অপারেটররা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাংলালিংকের চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, বলা হচ্ছে, ব্যক্তির নামে সিম সংখ্যা কমালে অপরাধ কমে যাবে। কিন্তু বিষয়টা এত সরল নয়। আরও পড়ুন: রবি-এয়ারটেলের বিরুদ্ধে গ্রামীণফোন-বাংলালিংকের বড় অভিযোগ গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, সিমের দিকে নয়, খাতের অন্যান্য সমস্যার দিকে নজর দেয়া উচিত। রবির চিফ করপোরেট অফিসার সাহেদ আলম বলেন, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে অপারেটররা বাজারে টিকে থাকতে পারবে কি না, সেটাও বিবেচনা করতে হবে। এদিকে আইওটি ডিভাইসের জন্য আলাদা নিবন্ধনের মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরদের বিশেষ সিরিজের সিম বিক্রির অনুমোদন দেবে বিটিআরসি।