নির্মাণের ১৫ বছর না পেরোতেই ব্যবহারের অযোগ্য প্রাথথমিক বিদ্যালয়ের ভবন

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের সুখানদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাইরে থেকে সাধারণ মনে হলেও ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়ে ভয়াবহ চিত্র। ভবনের দেয়ালজুড়ে অসংখ্য জরাজীর্ণ ছোট ছোট ফাটল। নির্মাণের ১৫ বছর না পেরোতেই খসে পড়ছে ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা। ফলে বিদ্যালয় ভবনটি এখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনেই প্রতিদিন ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিশেহারা তারা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এক শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়টিতে শ্রেণিকক্ষ সংকট চরমে। তাই জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই গাদাগাদি করে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ দেয়াল বা ছাদের অংশ খুলে পড়ার আশঙ্কা সারাক্ষণ তাড়া করছে তাদের। প্রতিনিয়ত তাদের ওপর খুলে পড়ছে পলেস্তারা ও ধুলাবালি। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে নষ্ট হয় বই-খাতা ও শিক্ষার্থীদের পোশাক। একই অবস্থা অফিস কক্ষেরও। গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকদেরও কাজ করতে হচ্ছে চরম ঝুঁকির মধ্যে। আরও পড়ুন: উন্নয়নের মানচিত্রে কেন বারবার পিছিয়ে গাইবান্ধা? চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমন মিয়া বলে, ‘ক্লাস করার সময় ইট ও ধুলাবালি খুলে পড়ে। মাঝে মাঝে টিফিনের সময় খাবারের মধ্যে নোংরা পড়ে। বৃষ্টি হলে গায়ে পানি পড়ে।’ সুখানদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিথিকা রানী সরকার বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদের নিয়ে সব সময় ভয়ের মধ্যে থাকতে হয় কখন কী হয়। বিদ্যালয়ের কক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে এখানেই ক্লাস করাতে হয়।’ গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান জানান, ‘নতুন যোগদান করায় বিদ্যালয়টির এমন অবস্থার কথা জানা নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ উল্লেখ্য, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩২০ টাকা ব্যয়ে অফিস কক্ষসহ চার কক্ষবিশিষ্ট এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এই বিদ্যালয়টির মতো একই অবস্থা সদর উপজেলার আরও প্রায় ১০টি স্কুলের।