বাংলাদেশে ‘ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা’র মধ্যে ১৯৭১ সালের ‘ভারত-পাক যুদ্ধে’ অংশ নেয়া একটি সেনা ব্যাটালিয়নকে ত্রিপুরায় মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।সম্প্রতি বিজেপির আইনি সেলের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানিক সাহা এ কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ঘটতে থাকা ঘটনা এবং এর সম্ভাব্য প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তবতা সম্পর্কে আমি দিল্লিতে প্রতিবেদন পাঠাচ্ছি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে ব্যাটালিয়ন মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, সেই ব্যাটালিয়নই এখন রাজ্যে (ত্রিপুরা) মোতায়েন রয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ট্রেলিগ্রাফ বলছে, ‘১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাইন্টেন ডিভিশন, বিশেষ করে ২০তম ডিভিশন এবং ৮ম, ৬ষ্ঠ এবং ৪র্থ মাউন্টেন ডিভিশনের কার্যক্রম পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।’ মানিক সাহা আরও বলেন, ‘অনেকে বলছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তে কোনো সেনাবাহিনী নেই। বর্তমানে যুদ্ধ করার জন্য সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন হয় না। শত্রুদের ধ্বংস করার জন্য একটি ক্লিকই যথেষ্ট– অপারেশন সিন্দুর-এর সময় যেমনটা দেখানো হয়েছে।’ আরও পড়ুন: নয়াদিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টায় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশে অস্থিরতা বৃদ্ধির জন্য পাকিস্তান দায়ী বলেও অভিযোগ করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। সবশেষে মানিক সাহা বলেন, আমরা খুশি যে আমাদের দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিরাপদ হাতে আছে, যিনি আমাদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে, ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ময়মনসিংহে সম্প্রতি ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দীপু চন্দ্র দাস নামে একজন পোশাকশ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশ হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তবে তা সত্ত্বেও, বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ব্যারিকেড ভেঙে কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভকারীরা কমপক্ষে দুটি স্তরের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড ধরে দূতাবাসে স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, বিক্ষোভের খবরে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভবনের বাইরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। আরও পড়ুন: হাইকমিশনে হামলা নিয়ে দিল্লির বিবৃতি প্রত্যাখ্যান ঢাকার প্রতিবেদন অনুসারে, এলাকাটি তিন স্তরের ব্যারিকেডিং দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে। এছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সাথে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাকে তলব করা হয়। কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।