শীতকাল এলেই গিজারের ব্যবহার হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। গরম পানির প্রয়োজন মেটাতে অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে গিজার চালু রেখে দেন। কিন্তু এই অভ্যাসই ডেকে আনতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে গিজার বিস্ফোরণের ঘটনা তুলনামূলকভাবে বেশি ঘটে এবং এর বেশিরভাগই ঘটে সামান্য অসচেতনতার কারণে। সবচেয়ে বড় ভুল হলো গিজার দীর্ঘ সময় ধরে চালু রাখা। স্নানের অনেক আগেই গিজার চালু করে রাখলে ট্যাঙ্কের ভেতরে পানির তাপমাত্রা ও চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত চাপ বের হওয়ার সুযোগ না পেলে ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হতে পারে। অনেক সময় স্নানের পর গিজার বন্ধ করতে ভুলে যাওয়াও বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটি সাধারণ ভুল হলো গিজারের সেফটি ভালভ ও থার্মোস্ট্যাট পরীক্ষা না করা। এই দুটি অংশ গিজারের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেফটি ভালভ আটকে গেলে অতিরিক্ত চাপ বের হতে পারে না এবং থার্মোস্ট্যাট বিকল হলে পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। নিয়মিত সার্ভিস না করালে এসব ত্রুটি ধরা পড়ে না এবং ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। অনেক বাড়িতেই বাথরুমের এমন জায়গায় গিজার বসানো হয় যেখানে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচল নেই। বন্ধ ও আর্দ্র স্থানে গিজার চালালে ভেতরের তাপ বের হতে পারে না। গ্যাসচালিত গিজারের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক। সঠিক বায়ুচলাচল না থাকলে বিষাক্ত গ্যাস জমে শ্বাসকষ্ট বা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। পুরোনো বা ত্রুটিপূর্ণ গিজার ব্যবহার করাও একটি মারাত্মক ভুল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গিজারের ট্যাঙ্ক দুর্বল হয়ে যায়, ভেতরে মরিচা জমে এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হতে শুরু করে। এসব সমস্যাকে উপেক্ষা করে গিজার ব্যবহার করলে যে কোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। গিজার বিস্ফোরণ এড়াতে কিছু সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। স্নানের ঠিক আগে গিজার চালু করুন এবং কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দিন। নির্দিষ্ট সময় পরপর গিজারের সার্ভিস করান এবং সেফটি ভালভ ও থার্মোস্ট্যাট ঠিক আছে কি না তা নিশ্চিত করুন। বাথরুমে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা রাখুন এবং পুরোনো বা সমস্যাযুক্ত গিজার ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। সামান্য সচেতনতা ও সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমেই শীতকালে গিজারকে নিরাপদ রাখা সম্ভব। মনে রাখবেন, একটি ছোট ভুলও বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। আরও পড়ুনযেসব লক্ষণে বুঝবেন গিজার বদলানোর সময় হয়েছেশীতে হিটার ছাড়াই ঘর গরম রাখতে পারবেন যেভাবে কেএসকে