এক কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে ফের দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে ডিএসইতে কমেছে মূল্যসূচক। তবে সিএসইতে সূচক বেড়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। একই সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কমে লেনদেনর গতি। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও মূল্যসূচকের পতন হয়। একই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। তবে দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার এসে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু একদিন পর এখন আবার দরপতন হলো। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের বড় উত্থান হয়। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টাজুড়ে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। কিন্তু দুপুর ১২টার পর বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। এতে দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪২টির। এছাড়া ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২২টির দাম কমেছে এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৫টির দাম কমেছে এবং ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আরও পড়ুনতারেক রহমানের আগমন: কিছু পোশাক কারখানায় ছুটির পরামর্শ বিজিএমইএ’র ইআইপি ও শিল্প নীতিমালাকে এক করার সুপারিশ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৫টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৩টির দাম কমেছে এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৭৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকার। ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সায়হাম কটন। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রহিম টেক্সটাইল, শাহজিবাজার পাওয়ার, মুন্নু ফেব্রিক্স, রহিমা ফুড, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এমএএস/কেএসআর