ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে রিটার্নিং অফিসার ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা করেছে নাসির উদ্দিন কমিশন।মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে ডিসি-এসপিসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়ে করেন সিইসি। এ মতবিনিময়ে অনুষ্ঠানে ডিসি-এসপিরা যেসব বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, সব জায়গায় অর্ডার প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। তাই দায়িত্ব পালনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ইসির সমর্থন দরকার। কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন বলেন, জনবল ঘাটতি আছে, কেন্দ্রে একজন করেও দিতে পারব না। লজিস্টিক ও ট্রান্সপোর্ট না থাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ঘাটতি রয়েছে। এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অন্তকোন্দলের কারণে পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। দুটি নির্বাচন এক সাথে হওয়া চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন পুলিশ সদস্যরা। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, সকলের মধ্যে সমন্বয় আছে। সব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। একইদিনে দুটো নির্বাচন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। সময়ের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান। খুলনা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, বদনাম ঘুচাতে ভোট কেন্দ্রের ভেতরে কোনো কারণেই প্রবেশ করতে চায় না পুলিশ। পরামর্শ দেন প্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিতে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে এবারের ভোটে কাজ করব। আরও পড়ুন: অর্ডার প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে ইসিকে সহযোগিতা সম্ভব নয়: আইজিপি রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, বৈধ অস্ত্র জমা নেয়ার কোনো চিঠি পায়নি প্রশাসন। অপতথ্য প্রচারে সঠিক সিদ্ধান্ত চায় মাঠ প্রশাসন। আইন মেনে সব কাজ করা হবে। আইনের বাইরে কোনো কাজ করতে চাই না এটা স্পষ্ট বার্তা। অপবাদ নিতে রাজি ডিসি হিসেবে, কিন্তু আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করব না। ঢাকা রেঞ্জ (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে বলে আমি আশাবাদী আমি। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, দিনের বেলা বক্তৃতা, রাতের বেলা তদবির। সবাই ষড়যন্ত্রের কথা বলছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র করছে কারা। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী পুলিশের মনোবল ধরে রাখতে নির্বাচনী বাজেটে মনোযোগ দিতে বললেন ইসিকে। ইতিহাসের সেরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আগামী ৫৪ বছরের নির্বাচনের রোল মডেল হিসেবে থাকবে এবারের নির্বাচন বলেও জানান তিনি। রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের অনেক অস্ত্র হারিয়ে গেছে। ৪৪৫টি পিস্তল পুলিশের বাইরে। অস্ত্র উদ্ধারে ইনসেনটিভ দেয়ার আহ্বান। কারণ পুলিশের অস্ত্র অনেক হারিয়েছে। প্রশাসনের বাইরে আছে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ বলেন, অস্ত্রের চেয়েও অপতথ্যের অপশক্তি কাজ করছে বেশি। বিভাগীয় কমিশনার ময়মনসিংহ মিজ্ ফারাহ শাম্মী ময়মনসিংহ বিভাগের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলেন। এছাড়াও সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার চেয়েছেন সব বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ উপলক্ষে রিটার্নিং অফিসার ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন-পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, নির্বাচন কমিশনার- আব্দুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত), ইসি সচিব আখতার আহমেদ, দেশের ৬৪ জন জেলা প্রশাসক, এসপি, আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারগণ ও ডিআইজিবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ৬৪ জেলার ৬৪ জন নির্বাচন কর্মকর্তা, ১০জন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা, যারা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন। পুরো মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।