তুরস্কের মধ্যাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি এলাকা কোনিয়া প্রদেশে দ্রুত হারে তৈরি হচ্ছে সিঙ্কহোল (ভূগর্ভে ধস)। কম বৃষ্টিপাত ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়াকেই এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন কৃষক ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। কারাপিনার এলাকায় ভুট্টা ও গমের খেতজুড়ে অসংখ্য বড় গর্ত দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও একটি মাত্র খেতেই ১০টির বেশি সিংকহোল তৈরি হয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলের অনেক প্রাচীন পানিভরা গর্তও এখন প্রায় শুকিয়ে গেছে। কোনিয়া টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্বের অধ্যাপক ফেতুল্লাহ আরিক জানান, কোনিয়া অববাহিকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০টি সিঙ্কহোল শনাক্ত করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় অনেক দ্রুত গতিতে বাড়ছে। তার মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও দীর্ঘমেয়াদি খরাই এর মূল কারণ। আগে যেখানে বছরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আধা মিটার কমতো, এখন তা ৪ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত নেমে যাচ্ছে। পানির সংকটে কৃষকরা বাধ্য হয়ে আরও বেশি কূপ খনন করছেন, যার অনেকগুলোই অনুমোদনহীন। এলাকায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার অবৈধ কূপ রয়েছে, যেখানে বৈধ কূপের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। এখনো কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও সিঙ্কহোলের হঠাৎ সৃষ্টি মানুষের জীবন ও সম্পদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। কারাপিনারের কৃষক মুস্তাফা শিক জানান, গত দুই বছরে তার জমিতে দুটি সিংকহোল তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে দ্বিতীয় গর্তটি তৈরি হওয়ার সময় তার ভাই খুব কাছেই কাজ করছিলেন। তিনি জানান, তখন বিকট ও ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল। ভূতত্ত্ববিদদের জরিপে তার জমিতে আরও দুটি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে কখন সেগুলো ধসে পড়বে তা বলা সম্ভব নয়। সূত্র: রয়টার্স এমএসএম