দলের সিদ্ধান্ত দল নেবে, আমি নেব আমার সিদ্ধান্ত: রুমিন ফারহানা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনী মাঠ ছাড়ছেন না ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত দল নেবে, আর নিজের সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেবেন।মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সময় সংবাদকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, ‘‘নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই আমি রাজনীতি করি। তাদের দ্বারাই অনুপ্রাণিত। তাদের মাঝপথে রেখে আমি কিছু করতে পারি না। নেতাকর্মীরাই আমার মনোনয়ন দানকারী।’’বিএনপির শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে। দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টি জানান। এই আসনে জমিয়তের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ‘খেজুর গাছ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন।আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিএনপির মতো বড় দলকে জোট রাজনীতির বাস্তবতা বিবেচনা করতেই হয়। তার ভাষায়, জমিয়তে উলামায়ের সঙ্গে জোট করতে গেলে আসন না দিলে জোট টেকানো সম্ভব নয়। সে কারণে দল বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে দলীয় শাস্তির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সময় সংবাদকে তিনি বলেন, ‌‌‘‘দলের সিদ্ধান্ত দল নেবে। আমি নেব আমার সিদ্ধান্ত।’’ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীরা অতীতে ছয়বার নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিবারই বিজয়ী হয়েছেন। এই আসন থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান রুমিন ফারহানা। তার বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে। বর্তমানে তিনি সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা।এক সময় বিজয়নগর উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার অধীন থাকায় এলাকাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের ফলে বর্তমানে পুরো বিজয়নগর উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত।এই আসনের সঙ্গে রুমিন ফারহানার পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাসও জড়িয়ে আছে। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে তার বাবা অলি আহাদ এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সে নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থী তাহের উদ্দিন ঠাকুরের কাছে পরাজিত হন।এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানা ছাড়াও বিএনপির আরও দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা হলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সদস্য এস এন তরুণ দে এবং জেলা বিএনপির সদস্য আক্তার হোসেন।এ আসনে আরও যেসব প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তারা হলেন জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মোবারক হোসাইন (দাঁড়িপাল্লা), জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহদী (শাপলা কলি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা নেসার আহমেদ নাসির (হাত পাখা) এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।