দীপু দাসের বাড়িতে শহিদুল আলমসহ অধিকারকর্মীরা, আইনি সহায়তার আশ্বাস

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে এবং আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে শোক প্রকাশ করেছেন ১৭ সদস্য বিশিষ্ট শহিদুল আলম অধিকারকর্মীদের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় তারা পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ন্যায়বিচারের জন্য সব ধরনের আইনগত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়াকান্দা গ্রামের দীপু দাসের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তারা। এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দীপু চন্দ্র দাসের স্ত্রী মেগনা রাণীর সঙ্গে কথা বলে আর্থিক অবস্থানসহ পরিবারের খোঁজখবর নেন।প্রতিনিধিদলটির সদস্যরা দীপুর পরিবারের পাশে সরকারকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।এ সময় নাগরিক সংগঠন কোয়ালিশন, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি, সম্প্রীতি যাত্রা, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম), হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি)–এর প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।আরও পড়ুন: দিপু চন্দ্র দাসকে পুড়িয়ে হত্যা: ১২ আসামি তিন দিনের রিমান্ডেপ্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, দীপু হত্যার পর সরকারের কাছ থেকে এখনো স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তারা বিচার দাবি করছেন। পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। এটাই যেন দেশে এ ধরনের শেষ ঘটনা হয় বলে দাবি তাদের।নাগরিক সংগঠন কোয়ালিশনের সদস্য আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, ‘এতগুলো মানুষ রক্ত দেয়ার পর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ পাব, আমরা ভেবেছি। কিন্তু সেখানে এ রকম অপবাদ দিয়ে বিনা প্রমাণে নৃশংসভাবে একটা মানুষকে হত্যা করা হলো, তার লাশকে পোড়ানো হলো, অসম্মান করা হলো; সেটি আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’আরও পড়ুন: দিপু চন্দ্র ও শিশু আয়েশাকে পুড়িয়ে হত্যার তীব্র নিন্দা হেফাজতে ইসলামেরলেখক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘সারা দেশে পরপর যে ঘটনাগুলো ঘটছে, তাতে আমরা স্তব্ধ। দীপুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিও আমাদের স্তব্ধ করেছে। আমাদের প্রশ্ন করতে হবে, এই ঘটনা কীভাবে ঘটল?’বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)–এর পরিচালক মাহবুবা আখতার তাদের পক্ষ থেকে সব রকম আইনগত সহায়তার আশ্বাস দেন।এ সময় আরও ছিলেন: মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট বাকী বিল্লাহ, সম্প্রীতি যাত্রার সংগঠক কবি ফেরদৌস আরা রুমি, মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা, মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের সদস্য আসমা উল হুসনা, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) প্রতিনিধি তাওহিদ আহমেদ রানা প্রমুখ।