চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস: লক্ষ্য অর্জনে সাত মাসে দরকার ৭০৬৯৩ কোটি টাকা

প্রথমবারের মতো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বেঁধে দেয়া এক লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ে চরম হিমশিম খাচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হিসাবে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তবে, সার্ভার জটিলতা নিরসনসহ বিরাজমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমধান করা গেলে বাকি সাত মাসে ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায় সম্ভব বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে অর্থবছর শুরু করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। প্রথম পর্যায়ে ৯২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে নভেম্বর পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬০২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। কাস্টমসের দেয়া তথ্যে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছিল ৭৬ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। এরআগে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৭৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬৮ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। এটিই রাজস্ব আদায়ে এ যাবতকালের রেকর্ড। রমজান সামনে রেখে যেমন তুলনামূলক ভোগ্যপণ্য আমদানি বেড়েছে, তেমনি জ্বালানি তেল ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি হচ্ছে বেশি। জুলাই থেকে গত পাঁচ মাসে ২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৪ কোটি ১০ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। ১২ দশমিক সাত এক শতাংশ প্রবৃদ্ধি হিসাবে অন্তত ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। তবে রাজস্ব আয় বাড়াতে আমদানি পণ্য ছাড়করণে দীর্ঘসূত্রতার অবসান চান ব্যবসায়ীরা। পিএইচপি গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ইফিসিয়েনসি বাড়াতে পারলে রাজস্ব আদায়ও কিছুটা বাড়তে পারে। আমরা যদি হয়রানির স্বীকার না হই তাহলেও রাজস্ব আদায় বাড়বে।’ আরও পড়ুন: রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন একদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লাখ-কোটি টাকা আদায়ের চাপ, অন্যদিকে ঘন ঘন সার্ভার ডাউন অনেকটা ভাবিয়ে তুলেছে শুল্ক কর্মকর্তাদের। তার সঙ্গে রয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের নানামুখী জটিলতা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসব জটিলতা দ্রুত নিরসনে ব্যবহারকারীদের দাবি যেমন রয়েছে, তেমনি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, ‘জায়গায় জায়গায় বিড়ম্বনা চলছে। এই বিড়ম্বনা সমাধান হয়ে গেলে, কাস্টমসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা করছি।’ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে আামাদের। রমজানকে সামনে রেখে এই মুহূর্তে ভোগ্যপণ্য আমদানি বেশি হচ্ছে। আমদানির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বাড়ছে। শুল্কায়নযোগ্য মূল্য যেটা, সেটাও বেড়েছে।