ভারত কখনোই বাংলাদেশের বন্ধু ছিল না: অধ্যাপক দিলারা চৌধুরি

‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি ও নয়া বন্দোবস্ত’ শীর্ষক আলোচনা ও প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেছেন, দিল্লির তাবেদারি করা গোষ্ঠী দেশে একের পর এক অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে।বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া অডিটোরিয়ামে ‘আজাদি মুভমেন্ট’ এ সভার আয়োজন করে। বক্তারা বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে যারা সাভারে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, লকডাউনের নামে পরিবহনে আগুন দিয়েছে। তারাই প্রথম আলো, ডেইলি স্টারে আগুন দিয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরি বলেন, বাংলাদেশ কখনো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ছিল না, আমরা অসাম্প্রদায়িক। অনেকেই ৪৭ কে বাদ দিতে চায়, কিন্তু এটাকে বাদ দিলে হবে না। এমনকি ৭১ সালে আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, কিন্তু সেটার ফসল ওঠাতে পারিনি ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে। আমাদেরকে আমাদের আত্মমর্যাদার ইতিহাস জানতে হবে। একটি রাষ্ট্র কখনোই আরেকটি রাষ্ট্রের বন্ধু হতে পাড়ে না। ভারত কখনোই বাংলাদেশের বন্ধু ছিল না। ক্যান্টনমেন্টে র’ এর অফিস ছিল। বাংলাদেশে সব সময় র’ এর থাবা ছিল। কালচারাল ফ্যাসিস্ট, সাংস্কৃতিক ফ্যাসিস্ট বিভিন্ন উইংসের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে এই শক্তি। ব্যারিস্টার শাহরিয়ার বলেন, হাদির রক্তের ওপর বেইমানি করে দাড়ি-টুপিওয়ালা গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় দুটি ডেড বডিকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, আশুলিয়ায়। জুলাই যোদ্ধাদের বডিকে পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ পুলিশকে কে দিলো? আমরা পুড়িয়ে ফেলার রাজনীতি করি না। আমরা হাদির মতো বলি, মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে না আসমানে হয়, সেজন্য আমরা বুক ফুলিয়ে ঘুরি। আরও পড়ুন: দীপু চন্দ্র ও ওসমান হাদি হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে: প্রেস সচিব  জুলাই রেভলুশনারি জার্নালিস্টস অ্যালায়েন্সের সাধারণ সম্পাদক ও জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী বলেন, নয়া বন্দোবস্ত মানে ফ্যাসিবাদের বিলুপ্তি। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময় নয়া বন্দোবস্তের নামে গাদ্দারি করেছে কয়েকজন উপদেষ্টা। বাংলা এডিশনের নিবন্ধন বাতিল করেছে এই সরকার। যদি উসকানি দেয়ার কারণে বাংলা এডিশনের নিবন্ধন বাতিল হয়, তাহলে হামিম গ্রুপের মিডিয়া, বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়াসহ আওয়ামী আমলের সব মিডিয়ার নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। তিনি বলেন, দুটি মিডিয়ায় আগুন নিয়ে অনেকের মায়াকান্না, সুশীলতা দেখা যাচ্ছে। যখন নয়া দিগন্তে আগুন দেয়া হলো তখন এই চেতনা কোথায় ছিল? সংগ্রামের সম্পাদককে যখন দাড়ি ধরে টান দিয়ে অফিস ভাঙচুর করে, চ্যাংদোলা করে নামানো হলো, তখন কোথায় ছিল? আমার দেশ পত্রিকা যখন বন্ধ করে দেয়া হয়, মাহমুদুর রহমানের ওপর আদালতে হামলা চালানো হয়, তখন এই প্রতিবাদ দেখা যায়নি কেন? শাপলায় গণহত্যা প্রচার করায় দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি যখন বন্ধ করে দেয়া হয় তখন কোথায় ছিল এমন সুশীলতা? এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। যারা বাংলাদেশে নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, তারা আবারও জুলাইয়ের মুখোমুখি হবে। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, অতীতের ফ্যসিবাদকে মানি নাই, নতুন ফ্যাসিবাদকেও মানবো না। হিন্দুস্তানের নীলনকশার সামনে মাথা নত করা যাবে না। আগামীতে হিন্দুস্তানকে খুশি করে কেউ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না৷ আরও পড়ুন: যৌথ বিবৃতিতে যা বললেন আট সংস্থা ও ৪৬ ব্যক্তি মেজর অব. শাহিন বলেন, এক এগারোর অবৈধ সরকারের কুশীলব হলো প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার। বিগত স্বৈরাচারি আমলে জঙ্গি নাটকের ন্যারেটিভ তৈরি করেছিল এই ভারতপন্থি মিডিয়া। এমনকি বিগত ২০ বছরে বিএনপি'র সবচেয়ে বেশি চরিত্র হনন ও ক্ষতি করেছে এই দুই পত্রিকা। লে. কর্নেল অব. হাসিনুর রহমান বলেন, আপনি দাড়ি টুপিকে জঙ্গিবাদ বলছেন, অথচ আমাদের হাদি, সাদিক কায়েম, মওলানা ভাসানী সবাই মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড। তারাই প্রকৃত ভালো মানুষ এবং সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। অনুষ্ঠানে ফাহিম ফারুকীর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, মেজর জেনারেল অব. মাহবুব, সংগঠক ডিউক হুদাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।