দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই পুরো বিমানবন্দর এলাকা কয়েক স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার প্রায় ২ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরে আনসার গার্ডের নিয়মিত সদস্যের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ও পেট্রোল ডিউটিতে অতিরিক্ত ব্যাটালিয়ান আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র মতে, তারেক রহমানের যাতায়াতের রুটজুড়ে প্রতিটি থানা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং বিশেষ এসকর্টসহ একাধিক চেকপোস্ট থাকবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় অন্তত ৯টি চেকপোস্ট এরইমধ্যে চালু আছে। চেকপোস্টের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গেছে। আরও পড়ুন: তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ঢাকায় যাওয়ার পথে কৃষক দল নেতার মৃত্যু বিমানবন্দর থেকেই তারেক রহমানের গাড়িবহর ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। এরইমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যাননের নিরাপত্তায় আমদানি করা হয়েছে বুলেটপ্রুফ গাড়ি। বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তারেক রহমান।শিডিউল অনুযায়ী, সিলেটে প্রথম অবতরণ সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে। সিলেটে প্রায় এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ডের পর বিমানটি সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে। শেষ পর্যায়ে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট) এলাকায় গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছে বিএনপি। কুড়িল মোড়সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। আরও পড়ুন: দেশের পথে তারেক রহমান বিমানবন্দরে নামার পর ভিআইপি লাউঞ্জে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এরপর তিনি জুলাই এক্সপ্রেসওয়ের সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখানে অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন তিনি। এরপর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখান থেকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে কাকলীর মোড় হয়ে গুলশান-২ নম্বরে বাসভবনে চলে আসবেন। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় আটক হয়ে প্রায় ১৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন তারেক রহমান। মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে চলে যান তারেক রহমান। সে বছরের ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশে আসার পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায় তার। একের পর এক মামলায় জর্জরিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা হয়নি আর। অবশেষে দীর্ঘ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যে প্রিয় মাতৃভূমিকে ফিরবেন তিনি।