২০২৬ সালেই ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি আশা করেন অধিকাংশ রুশ নাগরিক। রশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনমত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভিটসিওম পরিচালিত এক জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত জরিপ ফলাফলে ভিটসিওম জানায়, বিদায়ী বছরের মূল্যায়ন ও আগামী বছরের প্রত্যাশা নিয়ে করা তাদের বার্ষিক সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা ২০২৬ সালকে আগের চেয়ে বেশি আশাবাদী চোখে দেখছেন। জরিপে বলা হয়, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি কাটেনি, তবে ভবিষ্যতে উন্নতির সম্ভাবনায় বিশ্বাস বা আশা আগের চেয়ে বেড়েছে। ভিটসিওমের উপপ্রধান মিখাইল মামোনভ বলেন, জরিপে অংশ নেওয়া ১ হাজার ৬০০ জনের মধ্যে ৭০ শতাংশ মনে করেন, ২০২৬ সাল ২০২৫ সালের তুলনায় রাশিয়ার জন্য বেশি ‘সফল’ হবে। আর ৫৫ শতাংশ উত্তরদাতা এই আশাবাদের প্রধান কারণ হিসেবে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন। আরও পড়ুন>>রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর কতদিন চলবে?২০২৬ সালে প্রতিরক্ষা শিল্পে ব্যবসা হবে রমরমাপশ্চিমাদের আশ্বাসে ন্যাটোয় যোগদানের আশা ছেড়ে দিলো ইউক্রেন মামোনভ বলেন, এই আশাবাদের মূল কারণ হলো বিশেষ সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য সমাপ্তি এবং প্রেসিডেন্ট ঘোষিত জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ লক্ষ্য অর্জন। তার মতে, ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনীর চলমান অগ্রগতি, যুদ্ধের অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রের অনীহা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা পুরোপুরি পূরণ করতে না পারা—এই সব বিষয়ই যুদ্ধ অবসানের কোনো সমঝোতার সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে। মামোনভ জানান, যুদ্ধ শেষ হলে রুশ সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যদের সমাজে পুনঃএকীভূত করা, ইউক্রেনে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চল এবং রুশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর পুনর্গঠন হবে সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধ অবসানের অংশ হিসেবে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শিল্পাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারে তিনি প্রস্তুত। তবে তিনি শর্ত দিয়েছেন, রাশিয়াও একইভাবে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিতে হবে এবং ওই এলাকা আন্তর্জাতিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের আলোচকদের মধ্যে সম্প্রতি ফ্লোরিডায় একটি ২০ দফা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই পরিকল্পনার আওতায় বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকাতেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। তবে রাশিয়া এখনো ইউক্রেনে দখল করা কোনো এলাকা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেয়নি। মস্কোর দীর্ঘদিনের অবস্থান হলো—যুদ্ধ বন্ধের আগে ইউক্রেনকে ডনবাস শিল্পাঞ্চলের অবশিষ্ট নিয়ন্ত্রিত এলাকা ছাড়তে হবে। বর্তমানে রাশিয়া লুহানস্ক অঞ্চলের প্রায় পুরোটা এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/